সনাতন সৌঃ
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে বীরভূম জেলায় বর্ষা শুরু হলো। তবে এবছর বর্ষা ভারি বলা চলে না। এটা একটা হালকা বর্ষা বলা যাবে। জেলার সর্বত্রই এখন ঝিরঝিরে বৃষ্টি হচ্ছে। তবে আবার কখনও কখনও রোদ ঝলমল দেখা যাচ্ছে। অনেকেই বলছেন, এধরনের বর্ষা কখনো দেখা যায়নি। এ যেন লজ্জাজনক বর্ষা বলা যায়। এক কথায় গ্রাম বাংলায় একে বলে ‘নামলা’ বর্ষা। এই বৃষ্টির জল নীচু, সেচসেবিত এলাকায় ধান চাষে খুব কাজে লেগেছে। কিন্তু উঁচু অনুর্বর জমিতে বা অসেচ এলাকায় এই বৃষ্টি কোনো কাজেই লাগছে না। মাঠে জল দাঁড়াচ্ছে না। একটু রোদ হলেই সেই জল টেনে নিচ্ছে। এই সমস্ত জমিতে ধান চাষ করতে হলে প্রচুর জলের প্রয়োজন হয়। কিন্তু সে ভাবে ভারি বৃষ্টি হচ্ছে না বলেই ধান চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এই অসময়ে কী করে ধান চাষ করা যাবে এই নিয়ে চাষীদের দুশ্চিন্তা বাড়ছে। এই দুর্মূল্য বাজারে কী করে সংসার চলবে এবং চাষের ঋণ কিভাবে পরিশোধ করা যাবে তা ভেবে কূল পাচ্ছে না চাষীরা। পর্যাপ্ত জলের অভাবে এবার পুকুর, দিঘি, গড়ে জলে ভরে নাই। পুকুরে মাছ চাষ সংকট দেখা দিয়েছে। জেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় যে ধরনের বৃষ্টিপাত হচ্ছে তাতে ঘাটতি এখনও ৪২ শতাংশ রয়েছে। জেলাতে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে- দুবরাজপুর, সিউড়ী ও বোলপুর এলাকায়। সেখানে বৃষ্টিপাত হয়েছে যথাক্রমে দুবরাজপুরে-৪১.০২ মিলিমিটার, সিউড়ীতে-৩৫.০ মিলিমিটার ও বোলপুরে-২৮.২৩ মিলিমিটার। সবচেয়ে কম বৃষ্টিপাত হয়েছে রামপুরহাট, মুরারই, নলহাটি, নানুর মহম্মদবাজার, সিউড়ি এক নম্বর ব্লকে। এসব এলাকায় পর্যাপ্ত জল না থাকায় মাঠে ধান চাষ করা যাচ্ছে না। এখনও এসব এলাকার বহু চাষী ভারি বর্ষণের জন্য আশা করছে।যদি এর মধ্যে কখন ভারী বৃষ্টি হবে, তার জন্য চাতক পাখির মতো অপেক্ষা করছে চাষীরা। চাষীদের মন মানছে না। এই অল্প জল পেয়ে মাঠে জোরকদমে চাষের কাজে নেমে পড়েছে অনেকে। আবার অনেকেই পর্যাপ্ত জলের অভাবে ধান চাষ শুরু করতে পারেননি। তবে অসময়ে ধান চাষ করে চাষী কতটা লাভবান হবেন তা সময়ে বলে দেবে।