বিজয়কুমার দাসঃ
পশ্চিমবঙ্গ নাট্য আকাদেমি প্রতি বছরই সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের নাট্যদল নিয়ে নাট্য উৎসবের আয়োজন করে থাকে। থিয়েটারকে জেলার মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে কলকাতার সীমানা ছাড়িয়ে বিভিন্ন বিভাগের জেলায় এই উৎসব আয়োজনের শুভ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে নাট্য আকাদেমি। কলকাতার বিভিন্ন মঞ্চের পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন রবীন্দ্র সদনগুলিতে তাই অনুষ্ঠিত হচ্ছে নাট্যমেলা। এ বছর সিউড়ি রবীন্দ্র সদনকেও বেছে নেওয়া হয়েছে নাট্যমেলার জন্য। রাজ্যের বিভিন্ন জেলার নাট্যদলগুলি যেমন কলকাতার বিভিন্ন মঞ্চে গিয়ে অভিনয়ের সুযোগ পায় তেমনি কলকাতার বিভিন্ন জনপ্রিয় নাট্যদলের নাটক দেখার সুযোগ পায় জেলার মানুষ। ১৬-২০ ডিসেম্বর সিউড়ি রবীন্দ্র সদনে এই আয়োজনের বীরভূম পর্বের নাট্য উৎসবের সূচনা হল ১৬ ডিসেম্বর। রবীন্দ্র সদনের সামনের অঙ্গন সাজানো হয়েছিল সুচিত্রিত অঙ্গনসজ্জায়। আর এই উৎসবের অন্যতম অঙ্গ ছিল বাংলা থিয়েটারে আলোর যাদুকর তাপস সেনকে নিয়ে একটি অনবদ্য প্রদর্শনী। রাজ্য তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে জেলা তথ্য দপ্তরের সহযোগিতায় আয়োজিত এই নাট্য উৎসবে উপস্থিত ছিলেন জেলার বিভিন্ন প্রান্তের নাট্যদলের প্রতিনিধিরা এবং অবশ্যই নাট্যপ্রেমী দর্শকবৃন্দ। ১৬ ডিসেম্বর উৎসবের উদবোধনী সন্ধ্যায় রবীন্দ্র সদনের মধ্যমণি হয়ে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ নাট্য আকাদেমির সদস্য সচিব দেবকুমার হাজরা এবং জেলা সভাধিপতি কাজল সেখ। অন্যান্যদের মধ্যে উদবোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নাট্য আকাদেমির দুই সদস্য আশিস চট্টোপাধ্যায় ও মলয় ঘোষ। সহ সভাধিপতি স্বর্ণলতা সোরেনও ছিলেন অতিথির আসনে। জেলা তথ্য আধিকারিক অরিত্র চক্রবর্তী ছিলেন সমগ্র অনুষ্ঠানের আয়োজনের কেন্দ্রবিন্দু হিসাবে। সঙ্গীতশিল্পী অনুপম চক্রবর্তী ও সহশিল্পীদের সমবেত কণ্ঠে রবীন্দ্রনাথের “তাসের দেশ ” এর গান পরিবেশনের পর অতিথিদের হাত ছুঁয়ে প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে শুভ সূচনা হল পাঁচ সন্ধ্যার নাট্য উৎসবের। নাট্য আকাদেমির সদস্য সচিব দেবকুমার হাজরা তাঁর বক্তব্যে বললেন, নাট্য আকাদেমি থিয়েটারকে জেলায় জেলায় ছড়িয়ে দিতে পশ্চিমবঙ্গ নাট্যমেলার অঙ্গ হিসাবে নাট্য উৎসবের উদ্যোগ নিয়েছে। জেলার নাট্যকর্মী ও জেলা তথ্য দপ্তর এই সুন্দর আয়োজনে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। তিনি জানালেন, এই নাট্য উৎসবে কলকাতার পাঁচটি নাট্যদলের নাটক পরিবেশিত হবে। জেলা সভাধিপতি কাজল সেখ তাঁর বক্তব্যে এই উৎসবের জন্য জেলার সদর শহর সিউড়িকে নির্বাচন করায় নাট্য আকাদেমিকে ধন্যবাদ জানালেন। নাট্য উৎসবের প্রথম সন্ধ্যায় পরিবেশিত হল গোবরডাঙা শিল্পায়ন পরিবেশিত আশিস চট্টোপাধ্যায় নির্দেশিত মাণিক বন্দ্যোওয়াধ্যায়ের কালজয়ী উপন্যাস অবলম্বনে “পদ্মানদীর মাঝি” নাটক। সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন জেলার নাট্যজন স্বপন রায়। রবীন্দ্র সদন ছিল প্রায় পূর্ণ প্রেক্ষাগৃহ।