শম্ভুনাথ সেনঃ
মাঘ-ফাল্গুন মাস জুড়ে এক সময় কৃষিনির্ভর বীরভূমের প্রতি গ্রামে গ্রামে দেখা যেত আখের শাল। গরু কিংবা মহিষ দিয়ে লোহার বেলুন ঘুরিয়ে বের করা হতো আখের রস। তারপর আখ গাছের ছাল, ছিবড়ে পুড়িয়ে জ্বালানির সাহায্যে সেই রস ৩-৪ ঘন্টা আগুনে ফুটিয়ে তৈরি করা হতো আখের গুড়। পাশ দিয়ে পেরোলেই পাওয়া যেত মনকাড়া গন্ধ। কিন্তু এখন গ্রামে গ্রামে সেই গুড় তৈরির রমরমা আর নেই। জেলা জুড়ে কমে গেছে আখ চাষ। একদা এ জেলার আমোদপুর সুগার মিল এখন ইতিহাসের পাতায়। তবুও জেলার ময়ূরেশ্বর, লাভপুর, সাঁইথিয়া, ইলামবাজার, খয়রাশোল ব্লকের বেশ কিছু এলাকায় এখনো আখ চাষ হয়। দুবরাজপুর ব্লকের চণ্ডীপুর, কুখুটিয়া, মেজে, বেলসাড়া, পটলপুর, কুলেকুড়ি, এমন সব কৃষি প্রধান গ্রামের চাষীরা পরম্পরায় এখনো ধরে রেখেছেন আখ চাষ।
বেলসারা গ্রামে আখের রস দিয়ে গুড় তৈরিতে ব্যস্ত এখন বুদ্ধদেব ঘোষ, ষষ্ঠী মণ্ডল, অখিল ঘোষ, আশিস পাল, সাধন মণ্ডলদের মতো এলাকার চাষীরা। গ্রামের ৫০ টি চাষি পরিবার এখনো আখ চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন। নতুন প্রযুক্তির কারণে গরু-মহিষের পরিবর্তে এখন ডিজেল ইঞ্জিন মোটরের সাহায্যে বেলুন ঘুরিয়ে পেশায় করে বের করা হচ্ছে আখের রস। তাতে সময় এবং কায়িক পরিশ্রম দুইই কমেছে। বেলসাড়া গ্রামে প্রায় এক মাস ধরে চলা সেই গুড় প্রস্তুতির ছবি ধরা পড়েছে বীরভূমের নয়াপ্রজন্ম পত্রিকার ওয়েবসাইটের পাতায়। কথা বলেছেন এক আখচাষী বুদ্ধদেব ঘোষ—-!