বর্ধমানের ইতিহাস ও পুরাতত্ত্ব চর্চা কেন্দ্রের পক্ষ থেকে অধ্যাপক রমেনকুমার সরকে ”জীবনকৃতি সম্মান”

মেহের সেখঃ

অধ্যাপক রমেনকুমার সরের পিতা স্বর্গীয় হৃদয়কৃষ্ণ সর ছিলেন একজন আদর্শবাদী শিক্ষক এবং মা যুথিকা সর ছিলেন গৃহকর্ত্রী। খুব ছোটো বয়সে বাবা হৃদয়কৃষ্ণ সরের হাত ধরে বর্ধমান শহরে চলে আসেন অধ্যাপক রমেনকুমার সর। বর্ধমানের সি.এম.এস. স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর বর্ধমান রাজ কলেজে বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। এরপর বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করে ২০০২ সালে অধ্যাপক স্বপন বসুর তত্বাবধানে পি.এইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেন অধ্যাপক ডঃ রমেনকুমার সর। অধ্যাপনা জীবনের প্রথম পর্বে তিনি বর্ধমান বিবেকানন্দ কলেজ, হুগলির বাগাটি কলেজে অধ্যাপনা করার পর বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। পরবর্তীতে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের পদ থেকে শুরু করে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার এবং বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা-বানিজ্য-আইন অনুষদের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের গুরুদায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেছেন। অধ্যাপক ডঃ রমেনকুমার সর বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করার পাশাপাশি আমাদের দেশ এবং বাংলাদেশের বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কর্ম এবং পঠন-পাঠনের সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছেন। অধ্যাপক ডঃ রমেনকুমার সরের লেখা উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বই হল — ‘রেল : উনিশ শতকে বাঙালি জীবন ও সাহিত্যে’ , ‘চৈতন্য জীবন প্রসঙ্গ : সেকাল ও একাল’। এছাড়াও অধ্যাপক ডঃ সরের সম্পাদিত কয়েকটি বই হল — ‘শঙ্করীপ্রসাদ ব্যক্তি ও সৃষ্টি’, ‘বঙ্গভঙ্গ সমকাল ও উত্তরকালের চোখে’, ‘উনিশ শতকের প্রবাদ চর্চা (১ম ও ২ য় খণ্ড), বিদ্যাসাগরের ‘শব্দমঞ্জরী ও ‘শব্দ -সংগ্রহ’ ইত্যাদি। এছাড়াও ডঃ সরবঙ্গীয় -সাহিত্য-পরিষৎ পত্রিকা, বাংলা আকাদেমি পত্রিকা, কোরক, বলাকা, তথ্যসূত্র ইত্যাদি বিভিন্ন পত্রিকায় একশোর বেশি প্রবন্ধ লিখেছেন। অধ্যাপক ডঃ রমেনকুমার সর কলকাতার ছায়াপথ সাহিত্য পত্রিকার থেকে ভগবান চন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার ও বঙ্গীয়-সাহিত্য -পরিষৎ থেকে পঞ্চানন স্মৃতি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন। অধ্যাপক ডঃ রমেনকুমার সর বর্ধমানের ‘জাগরী’ সভাগৃহে বর্ধমানের ইতিহাস এবং পুরাতত্ত্ব চর্চা কেন্দ্রের থেকে সম্প্রতি “জীবনকৃতি সম্মান” লাভ করেন। স্বাভাবিক ভাবেই ছাত্র দরদী অধ্যাপক ডঃ রমেনকুমার সরের মতো শিক্ষকের সম্মান প্রাপ্তিতে ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে অভিভাবক সকলেই খুব খুশি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *