শম্ভুনাথ সেনঃ
শ্রাবণের ঘোর বর্ষায় মেঘ দাঁড়ালেও কৃপণ বৃষ্টি। ফলে বর্ষার ফসল আমন ধানের চাষ থমকে গেছে। অথচ কৃষি নির্ভর বীরভূম। আর বীরভূমের কৃষি মূলত বৃষ্টি নির্ভর। ৭০ শতাংশ মানুষের জীবন-জীবিকা কৃষির উপর নির্ভরশীল। এই বর্ষাকালে জেলায় অন্তত তিন লক্ষ বারো হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়। কিন্তু বৃষ্টির অভাবে ধানের বীজতলা অনেকটাই নষ্ট হয়ে গেছে। দু-চার দিনের ছিটে-ফোঁটা বৃষ্টিতে জমিগুলি ঘাস আর আগাছায় পরিপূর্ণ। আষাঢ় শ্রাবণের এই বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টি অভাবে মাঠে কাজ না থাকায় কৃষকের মন ও মুখ শুকনো। বৃষ্টি না হওয়ার কারণে জেলার জলাধার গুলিতেও জল সঞ্চয় নেই। তাই জেলার ১৯ টি ব্লকের মধ্যে ভূগর্ভস্থ জলে কিছুটা হলেও চাষ হচ্ছে ময়ূরেশ্বর, মুরারই, লাভপুর, ইলামবাজার, সাঁইথিয়া ব্লক এলাকায়। বাকি এলাকায় বিঘার পর বিঘা জমি অনাবাদি হয়ে পড়ে রয়েছে। মহম্মদবাজার, রাজনগর, খয়রাশোল, দুবরাজপুর, ছোটনাগপুর মালভূমি এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় জমি উঁচু নিচু থাকার কারণে বৃষ্টির জলের আধিক্য না থাকলে চাষতো করাই যায় না। এইসব এলাকায় স্যালো সাবমারসিবল নির্মাণ করা সম্ভব হয় না। কেননা ১০০ ফুট খুড়লেই বাধা পাথর। উল্লেখ্য, শুধুমাত্র বীরভূম বা বর্ধমান নয়, বৃষ্টির জলের অভাবে দক্ষিন বঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় এই মরশুমে চাষ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। বর্ষাঋতু আষাঢ় পেরিয়ে শ্রাবণের অর্ধেকটা সময় অতিক্রান্ত। এই ক’দিনে আর পর্যাপ্ত বৃষ্টি কি হবে! সেই আশা আর আশঙ্কায় দিন গুনছেন কৃষিনির্ভর বীরভূমের মানুষজন।