বোলপুরের শিবপুর মৌজায় শিল্পের নামে জমি অধিগ্রহণ করেও শিল্প হয়নি, কৃষকরা উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পায়নি সেনিয়ে বিক্ষোভ মিছিল জমিহারা সংগ্রাম সমিতির

সেখ রিয়াজুদ্দিনঃ

বোলপুর এলাকার শিবপুর মৌজায় শিল্প স্থাপনের উদ্দেশ্যে একদা বামফ্রন্ট সরকার ২৯৭ একর জমি অধিগ্রহণ করেন। ৪৫০ টি পরিবারের ১২৮৯ জন নুরপুর, কাশিপুর, সাবিরগঞ্জ , রায়পুর এবং বোলপুর এলাকার কৃষকরা জমি দেন। তৎকালীন বিরোধী দল হিসেবে তৃণমূল কংগ্রেস শিল্পায়নের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগঠিত করেন। পরবর্তীতে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পরে উক্ত জায়গায় বিশ্ব বাংলা বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ব বাংলা হাট, বিলাসবহুল আবাসন নির্মাণের দিকে ঝুঁকে পড়েন। তার প্রতিবাদ স্বরূপ জমিদাতাদের আন্দোলন শুরু হয় সরকারের বিরুদ্ধে। “হয় শিল্প,নয় জমি ফেরত”- সেই বার্তা নিয়ে জেলাশাসক থেকে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। সেখানে সুবিচার না পেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সদ্য সেখানে শুনানি শেষে বিচারপতি সূর্যকান্ত ও জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্য সরকারকে চার সপ্তাহের সময়সীমা বেধে দেন যে, জমিদাতাদের অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করে আদালতকে জানানোর।
উল্লেখ্য আদালত সমস্ত দিক বিবেচনা করেই নতুন করে ক্ষতিপূরণ নির্ধারণের নোটিশ দিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রিসভাকে। শিবপুর জমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে আন্দোলনকারীদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের চাপে অবশেষে পশ্চিমবঙ্গ সরকার নতুন ক্ষতিপূরণ নীতি প্রণয়নে বাধ্য হচ্ছে। রবিবার সেরূপ বেশ কিছু দাবি নিয়ে বোলপুরের পথে বিক্ষোভ মিছিলে পা মেলায় শিবপুরের জমিহারা কৃষকরা। এদিন শিবপুর জমিহারা কৃষক সংগ্রাম মঞ্চের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে তিনটি দাবি সমূহের মধ্যে প্রথমত, বোলপুর-শিবপুরের প্রত্যেক জমিহারা কৃষক, বর্গাদার ও পাট্টাদারকে বর্তমান বাজার মূল্যে ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। দ্বিতীয়ত, জমির সঙ্গে যুক্ত থাকা প্রতিটি ক্ষেতমজুর ও কৃষিশ্রমিককেও আর্থিক ক্ষতিপূরণের আওতায় আনতে হবে। তৃতীয়ত, প্রতিটি জমিহারা পরিবার থেকে অন্তত একজনকে স্থায়ী সরকারি চাকরিতে নিয়োগ করতে হবে। জমি হারা সংগ্রাম মঞ্চের নেতৃত্বদানকারীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গৌতম ঘোষ, শৈলেন মিশ্র প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *