সেখ রিয়াজুদ্দিনঃ
শিল্পের জন্য বোলপুরের শিবপুর মৌজায় সরকারি ভাবে অধিগ্রহণ করা হয় জমি কিন্তু সেখানে শিল্প না হওয়ায় জমি ফেরতের জন্য আন্দোলনে নামে অনিচ্ছুক জমিদাতা কৃষকেরা, যদিও সেই আন্দোলন ধীরে ধীরে স্থিমিত হয়ে পড়ে৷ শাসক বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্থানীয় নাগরিকদের নিয়ে গঠিত হয় কৃষক সংগ্রাম মঞ্চ। তাবড় তাবড় নেতাদের উপস্থিতিতে কৃষক আন্দোলন সংগঠিত করেও কোনো সুরাহার পথ দেখা যায়নি। সম্প্রতি গরুপাচার মামলায় সিবিআই এর হাতে অনুব্রত মন্ডল গ্রেফতার হতেই বোলপুরের শিবপুরে জমি হারা কৃষকরা ফের আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে বৃহস্পতিবার। হয় শিল্প হোক না হলে জমি ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক, সেই দাবীতে বোলপুর সংলগ্ন শিবপুর মৌজায় দীর্ঘদিন পর ফের কৃষক সংগ্রাম মঞ্চের বিক্ষোভ-আন্দোলন সংগঠিত হতে দেখা যায়। এদিন সকাল থেকেই স্থানীয় এলাকায় একাধিক জায়গায় জমি ফেরতের দাবি জানিয়ে পোস্টারিং পড়ে। এতদিন আন্দোলন স্থিমিত হয়ে যাওয়ার জন্য খোলাখুলি অনুব্রতর-আতঙ্কের কথা বলছেন তাঁরা৷ উল্লেখ্য ২০০২ সালে বামফ্রন্ট আমলে শিল্প নিগমের নামে শ্রীনিকেতন-শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পর্ষদের তত্ত্বাবধানে বোলপুরের শিবপুর মৌজায় ৩০০ একর চাষযোগ্য জমি অধিগ্রহণ করা হয় সরকারের পক্ষ থেকে৷ এরপর ২০১১ সালে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় এলেও সেই জমিতে শিল্পের ছোঁয়া মাত্র নেই বলে দাবি তোলেন জমি দিতে অনিচ্ছুক কৃষকেরা৷ বাম সরকারের জমি অধিগ্রহণের সময় অনুব্রত মণ্ডলের নেতৃত্বেই সেদিন আন্দোলনে পথে নেমেছিলেন চাষিরা। রাজ্যে পালা বদলের পর জমি অধিগৃহীত জায়গায় কেমিক্যাল হাব হওয়ার কথা ঘোষণা করেন রাজ্যের তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেই পরিকল্পনাও বাস্তবায়িত হয়নি। বোলপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘গীতবিতান’ নামক আবাসন প্রকল্প তৈরির কথা ঘোষণা করেন। শিল্পের পরিবর্তে আবাসনের কথা শুনে জমিদাতা কৃষকদের একাংশ প্রতিবাদ জানান এবং চাষযোগ্য জমি ফেরতের দাবিতে আন্দোলনে পথে নামেন। তাঁদের দাবি ছিল, শিল্প হলে জমি দেব, নইলে জমি ফিরিয়ে নেব। এদিন ফের হয় শিল্প, না হয় জমি ফেরতের দাবীতে কৃষকেরা আন্দোলনকে জোরদার করতে পথে নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।