বীরভূমের রায় বালিজুড়ি গ্রামে দেবী দুর্গার বোধন

সন্তোষ পালঃ

বাঙালি শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। কাশফুলের সমারোহ, শরতের নীলাকাশ বাঙালীর দরজায় কড়া নেড়ে জানান দেয় দেবী দুর্গার আগমন বার্তা। পুজোর সপ্তাহ দুয়েক আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় বোধন বীরভূমের রায় বালিজুড়ি গ্রামে। প্রায় চার শতাধিক বছর পূর্বে রায় পরিবারের সদস্যরা দুর্গাপুজোর প্রচলন করেন। দুবরাজপুর ব্লকের বর্ধিষ্ণু গ্রাম রায় বালিজুড়ি। এখানকার বিশেষ বৈশিষ্ট্য কৃষ্ণা নবমী তিথির সকালে দেবী দুর্গার ঘট আনা হয় শাস্ত্র বিধি মেনে স্থানীয় যমুনা পুষ্করিণী থেকে। পঞ্চমুণ্ডী দ্বারা নির্মিত দুর্গা মন্দিরে ঘট স্থাপন করার পর যথারীতি শাস্ত্রবিধি মেনে তান্ত্রিক মতে পুজো করা হয় এবং ছাগ বলি দেওয়া হয়। পরবর্তীকাল প্রায় ৩৬০ বছর পূর্বে তেকুরাম চট্টোপাধ্যায় প্রতিষ্ঠা করেন দেবী দুর্গার মন্দির। তিনি ছিলেন রাজনগরের রাজাদের দেওয়ান। রাজনগরের রাজা আলিনকি খাঁ পুজোর সাহায্যের জন্য সাতটি পুষ্করিণী ও চৌষট্টি বিঘা নিষ্কর জমি দান করেন। স্বভাবতঃই পুজোর যে বিশাল ব্যয়ভার তা অনেকখানি সহায়ক হয় এজন্য। দেওয়ান তেকুরাম পরে বৈবাহিক সূত্রে বালিজুড়িতে আবদ্ধ হন। এই মন্দিরে যথারীতি আজও দেবী দুর্গার পুজো হয়ে আসছে রীতি অনুসারে। আজ সকালে যমুনা পুষ্করিণী থেকে ঘট এনে দু্র্গামন্দিরে স্থাপন করে রীতি মেনে পুজো করা হয়। বর্তমানে চট্টোপাধ্যায় ও মুখ্যোপাধ্যায় পরিবারের উত্তরিধিকারী ও দৌহিত্ররা এই পুজো করে আসছেন মহাসমারোহে। আজ বোধনের দিন থেকেই মহা দশমী পর্যন্ত সমানভাবে চলবে পুজো ও সন্ধ্যা আরতি। আজ পুরো গ্রাম জুড়ে অরন্ধন দিবস পালিত হয়। গ্রামের সকলে অন্নভোগ গ্রহণ করেন আজ। এই অন্নভোগ চলবে মহাদশমী পর্যন্ত। এমনটাই জানালেন পুজো কমিটির সভাপতি বিমান মুখার্জি। বহু মানুষ কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন কেউ কেউ বা বিদেশেও থাকেন কিন্তু দুর্গাপুজোর সময় সকলেই ঘর মুখো হন এবং পুজোর চার দিন সকলের সাথে আনন্দ ভাগ করে নেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *