অনিতা মুখার্জী
নানুর চণ্ডীদাস স্মৃতি সাধারণ পাঠাগারে সাহিত্য সভায় চালু করা হল কাঞ্চন সরকার স্মৃতি পুরস্কার। প্রত্যেক মাসে প্রথম শনিবার নানুর চণ্ডীদাস স্মৃতি সাধারণ পাঠাগারে সাহিত্য সভা হয়। ২০১১ সাল থেকেই এই সভা হয়ে আসছে।করোনার জন্য দুবছর বন্ধ ছিল।৫ই মার্চ ২০২২ সালে আবার কবি, সাহিত্যিকদের নিয়ে আসর বসে।ততদিনে আমরা হারিয়ে ফেলেছি বীরভূমের গর্ব, আদর্শ, নয়াপ্রজন্মের সম্পাদক, নবজাতক, সবুজের অভিযান ও বসুন্ধরা মঞ্চের জনক কাঞ্চন সরকারকে। মূলতই, সভায় কাঞ্চন সরকারের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে সাহিত্য সভা সেদিন কাঞ্চন স্মরণসভা হয়ে ওঠে। প্রত্যেক কবি, সাহিত্যিক হদয়ভরা বেদনা ও ভারাক্রান্ত মনে কাঞ্চন সরকার স্মৃতি তর্পন শুরু করেন।কাঞ্চন সরকার নানুর পাঠাগারের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে এখানকার সভ্যপদ গ্ৰহণ করেছিলেন।পাঠাগারের গ্ৰন্থাগারিকের সঙ্গে তাঁর ছিল একটা আত্মিক যোগ।পাঠাগারের সম্পাদক সুব্রত ভট্টাচার্য্য ছিলেন তাঁর বন্ধুসম।সভাপতি মানিক চাঁদ রায় ছিলেন তাঁর ত্রিশ বছর পার হওয়া বীরভূমের পূর্ণাঙ্গ সাপ্তাহিকী পত্রিকা নয়াপ্রজন্মের গ্ৰাহক। নানুর সাহিত্য সভায় আসা সমস্ত কবি, সাহিত্যিক, যেমন অসীম ব্যানার্জী, চাঁদ রায়, দেবাশীষ পাল, শ্যামলসাহা, উজ্জ্বল মুখার্জী, শশাঙ্ক শেখর মেটে, ইন্দ্রালী ব্যানার্জী, রঘুরাজ সিংহ এঁদের প্রত্যেকের সঙ্গে ও নাম না করা আরও অনেকের সঙ্গেই তাঁর হৃদ্যতার সম্পর্ক ছিল। গোটা বীরভূম জেলাকে তিনি চিনতেন বা চেনার চেষ্টা করতেন।
তাঁর বার্তাই ছিল জেলাকে চিনুন, জেলাকে জানুন। প্রত্যেক মানুষের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে সম্পর্কের উপর গুরুত্ব দিতেন। তাই এ হেন কাঞ্চন সরকারের স্মৃতি তর্পন করতে করতে উজ্জ্বল মুখার্জী দৃপ্ত কণ্ঠে ঘোষণা করেন কাঞ্চন সরকারের প্রতি একদিন শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁর প্রতি আমাদের কর্তব্য সারলে চলবে না। কাঞ্চনদা কে আজীবন মনে রাখার জন্য কাঞ্চন সরকার স্মৃতি পুরস্কার চালু করতে হবে।গ্ৰন্থাগারিক অনিতা মুখার্জী তৎক্ষণাৎ উজ্জ্বল মুখার্জীর প্রস্তাবকে সাদরে গ্ৰহণ করেন। সেই মোতাবেক অনিতা মুখার্জীর আর্থিক সহযোগিতায় নানুর পাঠাগারের সাহিত্য সভা আঙ্গোরা নিবাসী কৃতী ছাত্র গোপাল চ্যাটার্জীর হাতে প্রথম অর্থাৎ ২শা মার্চ, ২০২২ তারিখ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। কাঞ্চন সরকার মানুষের গুণের কদর করতেন ও মানবতার মূর্ত প্রতীক ছিলেন। গোপাল চ্যাটার্জী ভারতের মধ্যে ভূগোলে নেটে প্রথম স্থানাধিকারী ছাত্র। কাঞ্চন সরকারের স্মৃতির প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা জানাতে পেরে নানুর চণ্ডীদাস স্মৃতি সাধারণ পাঠাগারের সাহিত্য সভা খুব খুশি।গোপাল চ্যাটার্জীর হাতে পুরস্কার তুলে দেন সাহিত্যিক অসীম ব্যানার্জী মহাশয়।পরবর্তীতে আবারও আমরা সাহিত্য সভায় কাঞ্চন সরকার স্মৃতি পুরস্কার তুলে দেব ব্যক্তিবিশেষের হাতে।
