শম্ভুনাথ সেনঃ
বাংলা ভাগ মানুষ মন থেকে মেনে নেয়নি৷ কিন্তু, রাষ্ট্রশক্তির কাছে পরাজিত হয়ে বাস্তবকে মেনে নিতে হয়েছে। তবুও আজও দুই বাংলার মানুষ একই ভাষায় কথা বলেন, স্বপ্ন দেখেন। এ সত্যতাকে গুরুত্ব দিয়ে গত ৪ মে “দুই বাংলার শিল্প সংস্কৃতি ও কাঁটাতারের প্রভাব” শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে “প্রাচী-প্রতীচী আর্ট গ্যালারি।”
বীরভূমের বোলপুর শান্তিনিকেতনের “পঞ্চবন” আর্ট রিসর্টের খাপছাড়া মঞ্চে এই আলোচনা সভায় অংশ নিয়েছিলেন এপার-ওপার দুই বাংলার শিল্পী, শিক্ষাবিদ, অধ্যাপক, সাংবাদিক ও সমাজকর্মীরা৷ ইন্দো-বাংলা শিল্প সন্ধ্যার এই আলোচনায় বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশের ড. ফরিদা জামান, ড. দুলাল চন্দ্র গাইন, ড. সুশান্ত কুমার অধিকারী, এপার বাংলার থেকে অংশ নিয়েছিলেন, সাংবাদিক দেবদীপ পুরোহিত, নাট্যকর্মী জুলফিকার জিন্না, সমাজকর্মী আহসান কামাল প্রমুখ৷ অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক রজত রায়চৌধুরী। প্রত্যেকেই তাঁদের বক্তব্যে তুলে ধরেন, কোনো কাঁটাতার কখনই শিল্প-সংস্কৃতির মেলবন্ধনে বাধা হতে পারে না৷ তবে বাস্তবতা মেনে নিয়েই দুই বাংলার মানুষ তাদের শিল্প-কৃষ্টির আদান-প্রদান করে চলেছেন বছরের পর বছর ধরে৷ এই আলোচনা সভা ছাড়াও পরিবেশিত হয় বাংলার প্রাচীন লোকসংস্কৃতি ভাদু নাচ ও মুখোশ নৃত্য৷ অংশ নেন স্থানীয় শিল্পীরাই।
অনুষ্ঠানের আয়োজক তথা শিল্পী তাপস মল্লিক বলেন, “দুই বাংলার মানুষের জনজীবন, লোকাচার, শিল্প- সংস্কৃতির উপর কাঁটাতারের প্রভাব কতটা পড়বে এই নিয়েই ছিল মূল আলোচনা। একটা দেশ তৈরি হতে লাগে জাতি, একটা জাতি তৈরি হয় ভাষা ভিত্তিক। কিন্তু দুই বাংলা আলাদা হলেও জাতি কিন্তু একটাই৷ তাই সংস্কৃতির আদান-প্রদানের মধ্য দিয়ে যাতে বাঙালি জাতি আবার শ্রেষ্ঠত্বের শিখরে পৌঁছায় তারজন্য লড়াইটা চালিয়ে যেতে হবে আমাদেরই।”