নয়াপ্রজন্ম প্রতিবেদনঃ
জাতীয় পতাকা উত্তোলনে মানবাধিকার কমিশনঃ সমগ্র ভারত জুড়ে পালিত হলো ৭৭ তম স্বাধীনতা দিবস। ১৫ আগষ্ট বীরভূম জেলার দুবরাজপুর পৌরসভার রঞ্জন বাজার মিলন সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন দুবরাজপুর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যা দেবযানী হালদার, সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর বুলটি চক্রবর্তী সহ অন্যান্য সদস্যরা। পাশাপাশি রঞ্জন বাজার কালী কমিটির উদ্যোগে এদিন পালিত হল ৭৭ তম স্বাধীনতা দিবস। এদিন জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ডিফেন্ডার অফ ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের অল ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান ডক্টর ডি কে সাউ। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে তিনি বলেন বর্তমানে হিউম্যান রাইটস নানাভাবে কাজ করে চলেছে বিশেষ করে মানুষের অধিকার, নারীদের প্রতি বলাৎকার প্রভৃতি বিষয়ে তিনি সচেতনতার বার্তা দেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ডিফেন্ডার অফ ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলর সদস্য পিন্টু নুরিয়া, রবীন কোঁড়া, নরেশ কুমার সিং, হীরা যাদব, বীরভূম জেলার সভাপতি সমীরন চ্যাটার্জী জেলা সহ-সম্পাদক সমীর তন্তুবাই সহ ক্লাবের সদস্যরা। বর্তমানে দুর্নীতি বা ভ্রষ্টাচার এর বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করার জন্যই মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা তাদের মতবাদ ব্যক্ত করেন। যে সমস্ত সদস্য ভালো কাজ করছেন তাদের হাতে আইডেন্টিকার্ড ও সার্টিফিকেট তুলে দেন উপস্থিত অতিথিগণ। এ বিষয়ে রঞ্জনবাজার কালী কমিটির সদস্য তথা জেলা মানবাধিকার কমিশনের সহকারী সম্পাদক সমীর তন্তুবাই তার বক্তব্য তুলে ধরেন। অপরদিকে অল ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান ডক্টর ডি কে সাউ তার বক্তব্যে মানুষের অধিকার আদায়ের কথা তুলে ধরেন।
লোকপুর থানায় স্বাধীনতা দিবস পালনঃ ১৫ আগস্ট ৭৭ তম স্বাধীনতা দিবস, দেশজুড়ে মহাসমারোহে পালিত হচ্ছে দিনটি। সরকারি বেসরকারি নানা সংস্থা বা সংগঠনের পক্ষ থেকেও যথাযথ ভাবে নানান অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালন করা হচ্ছে। সেরূপ লোকপুর থানার পক্ষ থেকেও এদিন থানা চত্বরে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দেশের ৭৭ তম স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়। পাশাপাশি সমস্ত মনীষীদের প্রতীকৃতিতে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করা হয়। পতাকা উত্তোলন করেন লোকপুর থানার ওসি অশোক সিংহ মহাপাত্র। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন থানার অন্যান্য পুলিশ ও সিভিক ভলিন্টিয়ারবৃন্দ। পথ চলতি মানুষজন সহ স্থানীয় কচিকাঁচাদের মিষ্টি মুখ করানো হয়।
মেটেলা উচ্চ বিদ্যালয়ে স্বাধীনতা দিবস পালন উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানঃ সমগ্র দেশজুড়ে ৭৭ তম স্বাধীনতা দিবস যথাযোগ্য মর্যাদা সহকারে পালিত হয় মঙ্গলবার। অন্যান্য স্থানের ন্যায় দুবরাজপুর ব্লকের মেটেলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যেও দেখা যায় চরম উৎসাহ উদ্দীপনার মাধ্যমে দিনটি পালনের চিত্র। স্থানীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কল্যাণ দে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন। তারপর ড্রাম সহ বিভিন্ন ধরনের বাদ্যযন্ত্র ও রংবেরঙের বেলুন সহযোগে পদযাত্রা বের হয়। গ্রাম পরিক্রমা শেষে বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এদিন ছাত্রছাত্রীরা দেশাত্বকবোধক গান, কবিতা, নৃত্য, বক্তব্যের মাধ্যমে দিনটি পালিত হয়।
বারাবন মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত স্বাধীনতা দিবস উদযাপনঃ ১৫ আগস্ট সমগ্র ভারতবর্ষব্যাপী পালিত হচ্ছে ৭৭ তম স্বাধীনতা দিবস। সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরে, ক্লাব মাদ্রাসা সহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে নানা স্থানে এবং নানান অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিনটি পালন করা হচ্ছে। সেইরূপ খয়রাসোল ব্লকের মাদ্রাসা ইসলামিয়া আশরাফুল উলুম, বারাবন এর পক্ষ থেকেও এদিন মাদ্রাসার মাঠে মাদ্রাসায় পাঠরত পড়ুয়া, শিক্ষক অভিভাবক তথা গ্রামবাসীদের নিয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। ইংরেজি সরকারের বিরুদ্ধে দেশকে স্বাধীন করার জন্য যে লড়াই সংগ্রাম হয়েছে তার ইতিহাস বৃত্তান্ত তুলে ধরা হয় আলোচনা সভায়। তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারকে উৎখাত করতে যেভাবে দেশের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যে লড়াই চালিয়েছেন তা আজও স্মরণীয়। আমাদেরকেও সেই পথ সেই মত তথা পূর্ব পুরুষদের দেখানো পথেই সকলকে চলা উচিত। সকল সম্প্রদায়ের মানুষকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে বসবাস করার আহ্বান জানান।শান্তি শৃঙ্খলায় যেন বিঘ্ন না ঘটে তা পরস্পর সকলের দায়িত্ব এবং কর্তব্য বলে বক্তব্যের মাধ্যমে তুলে ধরেন। মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন মাদ্রাসার সভাপতি শেখ শাহজাহান। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হাফেজ মাওলানা মোঃ নাসির উদ্দিন সহ মাদ্রাসার অন্যান্য শিক্ষক পড়ুয়া ও অভিভাবক তথা গ্রামবাসীগন। স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে গ্রামবাসী সহ এলাকাবাসীর প্রতি যে বার্তা দেওয়া হয় তাহা এক সাক্ষাৎকারে বিস্তারিত ভাবে বলেন স্থানীয় মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হাফিজ মৌলানা মহম্মদ নাসিরউদ্দিন।
বীরভূমের মাধাইপুর পল্লীমঙ্গল বিদ্যালয়ে স্বাধীনতা দিবস উদযাপনঃ সারাদেশের সাথে এ জেলা বীরভূমেও স্কুল, কলেজ, সরকারি প্রতিষ্ঠান, ক্লাব সর্বত্রই ৭৭ তম স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলিত হয়। মাধাইপুর পল্লীমঙ্গল বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা এদিনের এই স্বাধীনতা দিবসে অভিনবত্বের ছোঁয়া আনে। এই বিদ্যালয়ের ক্ষুদে শিল্পীরা নিজ হাতে তৈরী তেরঙা পতাকায় সাজিয়ে তোলে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে অনুষ্ঠান মঞ্চ। সুসজ্জিত পোশাকে মার্চপাস্ট, প্রভাতফেরি ও নৃত্য গান, কথা, কবিতায় জাঁকজমক পূর্ণ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালন করে স্বাধীনতা দিবস। সেই সঙ্গে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জিমনাস্টিক প্রদর্শন অনুষ্ঠানটিকে আরো আর্কষনীয় করে তুলে। বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের সম্মিলিত সমবেত সংগীত ধ্বনিত হয় বিদ্যালয় অঙ্গনে।
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বৃক্ষরোপণ ও যুব সংস্থার জন্ম রাজনগরেঃ দেশের ৭৭৩ম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের উদ্যোগে রাজনগর মহাবিদ্যালয়ে আয়োজিত হলো বৃক্ষরোপণ উৎসব। পাশাপাশি রাজনগর খোদাইবাগ গ্রামে স্থানীয় যুবকের উদ্যোগে জন্ম হলো মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি নিয়ে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা “প্রচেষ্টা”-র। সেই সঙ্গে সেখানেও আট থেকে আশিদের নিয়ে পালিত হয় স্বাধীনতা দিবস। পাশাপাশি সেখানকার যুবকদের উদ্যোগে এলাকার দু:স্থ মানুষের মধ্যে নতুন বস্ত্র বিলি করা হয়।
উদ্যোক্তো মহিলারা, রক্তদাতারাও মহিলা, স্বাধীনতা দিবসে মহিলা রক্তদান শিবির সিউড়িতেঃ স্বাধীনতা দিবসের দিন সিউড়ির বড়বাগান প্রান্তিক সংঘের মহিলা শাখা “বাগেশ্রী”এর পরিচালনায় রক্তদান শিবির অনুষ্ঠিত হলো বড়বাগান প্রান্তিক সংঘে। ফিতে কেটে এই রক্তদান শিবিরের উদ্বোধন করেন বার্লিন অলিম্পিকে ভলিবলে স্বর্ণপদক জয়ী দলের সদস্য রিয়া রায় ও রাজশ্রী সিনহা। উদ্বোধনী পর্বে এছাড়া উপস্থিত ছিলেন সিউড়ি পৌরসভার চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়, সিউড়ি হাসপাতালের সুপার ডাঃ নীলাঞ্জন মন্ডল, কাউন্সিলর অনিল দাস ও কুন্দন দে প্রমুখ। এদিন এই রক্তদান শিবির পরিচালনায় ছিলেন বড়বাগান প্রান্তিক সংঘের মহিলা শাখা বাগেশ্রীর সদস্যরা। এই রক্তদান শিবিরে কেবলমাত্র মহিলারাই রক্তদান করেন। রক্তদাতাদের হাতে একটি করে মেমোন্টো ও গাছের চারা তুলে দেন অতিথিরা। বাগেশ্রী শাখার এক সদস্যা জানান, গত বছর থেকে মহিলা রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হচ্ছে। প্রথম দিকে সেভাবে সাড়া না মিললেও এ বছর ব্যাপক সাড়া মিলেছে। মহিলারা উৎসাহের সঙ্গে রক্তদান করেন এই শিবিরে। হাসপাতাল সুপার ডাঃ নীলাঞ্জন দে ও সিউড়ির চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় এই ধরনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান।