নয়াপ্রজন্ম প্রতিবেদনঃ
পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক উন্নয়ন পর্ষদ পরিচালিত প্রাথমিকের শেষ পরীক্ষা তথা বৃত্তি পরীক্ষায় কৃতি ছাত্র-ছাত্রীদের সংবর্ধনা ও পুরস্কার প্রদান করা হলো ১০ সেপ্টেম্বর সিউড়ি রামকৃষ্ণ সভাগৃহে। পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক উন্নয়ন পর্ষদ সিউড়ি শাখার পক্ষ থেকে এমন অনুষ্ঠানের আয়োজন। ১০ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় শিক্ষানুরাগী বংশীধর দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান শুরু হয়। তিনি ছাড়াও এদিন উপস্থিত ছিলেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বিজয় কৃষ্ণ দলুই, শান্তি কুমার মুখার্জী, পার্থ মুখার্জী, কল্যাণ রায় জেলার বৃত্তি পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা ও পশ্চিমবঙ্গ সেভ এডুকেশন কমিটির সদস্য কার্তিক হাজরা, জেলা সম্পাদিকা ফারিদা ইয়াসমিন, নিতাই অঙ্করসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ, ছাত্র-ছাত্রী এবং অভিভাবকগণ। এদিন শিক্ষানুরাগী শান্তিকুমার মুখার্জীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয় সংস্থার পক্ষ থেকে। তিনি বৃত্তি পরীক্ষার উপযোগিতা নিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। অধ্যাপক বিজয় কৃষ্ণ দলুই বলেন পাশফেল প্রথা বা বৃত্তি পরীক্ষা শিক্ষার মান উন্নয়নে এক দিগন্ত। ২০২২ সালে উত্তীর্ণ জেলার ৭৫ জন কৃতি পড়ুয়াকে আজ সংবর্ধনা ও পুরস্কার প্রদান করা হলো। উপস্থিত অতিথিবৃন্দ ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। সভাপতির ভাষণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। উল্লেখ্য, ১৯৯২ সাল থেকে বেসরকারি উদ্যোগে বৃত্তি পরীক্ষা হয়ে আসছে। অভিভাবক ও পড়ুয়াদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এই পরীক্ষা। এবছর পরীক্ষার ফর্মফিলাপ হয়ে গেছে, অক্টোবর মাসে সেই পরীক্ষা নেওয়া হবে।
এছাড়াও “নতুন সকাল” এডুকেশনাল সোসাইটির উদ্যোগে ১০ সেপ্টেম্বর সিউড়ী বড়বাগানে সবজি মার্কেটের কাছে নিজস্ব ভবনে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া দুঃস্থ মেধাবী কৃতি ছাত্রছাত্রীদের” শহীদ রাজেশ ওরাং স্মৃতি” প্রেরণা স্কলারসিপ বৃত্তি প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্থার অন্যতম কর্ণধার তথা সভাপতি অম্বিকানন্দন মন্ডল। প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিউড়ী পৌরসভার চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় ও পাটজোড় আশ্রমের স্বামীজি বাবলু মহারাজ, সিউড়ী সংশোধনাগারের ওয়েলফেয়ার অফিসার ব্রততী বিশ্বাস, শিক্ষারত্ন পুরষ্কার প্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সুজাতা সাহা, সিউড়ী পৌরসভার কাউন্সিলার আব্দুল শফি সহ বিশিষ্ট জনেরা। স্বাগত ভাষণ দেন উক্ত সংস্থার সোসাইটির সহসভাপতি প্রসেনজিৎ মুখোপাধ্যায়। সোসাইটির সম্পাদক উল্লাস দাস জানান যে, আমাদের নতুন সকাল সংস্থা বিগত চার বছর যাবৎ আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া দু্ঃস্থ ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি স্কলারসিপ প্রদান করে আসছি। এবার ছিল এই বৃত্তি প্রদানের চতুর্থ বর্ষ। এই বছর ১০জন অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া দু্ঃস্থ মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের এই বৃত্তি প্রদান করা হলো এবং ২জন ছাত্রছাত্রীকেও আর্থিক সাহায্য করা হলো। রাজেশ ওরাং স্মৃতি প্রেরণা স্কলারসিপ বৃত্তি পেলেন কেন্দুয়াতে বসবাসকারী প্রতিবন্ধী ছাত্র কালিদাস দেবাংশী; সে ১৯বছর পর আবার পড়াশোনা শুরু করে এবার ৭৫% নম্বর নিয়ে মাধ্যমিক পাশ করেছে, মহম্মদবাজার ব্লকের ছাত্র অণিমেষ দলুই, হেরুকার ছাত্র জাবেদুল ইসলাম, কোপাই এর ছাত্রী পল্লবী চট্টোপাধ্যায়, নোয়াপাড়ার ছাত্র দীপাঞ্জন ঘোষ, কুরুন্নাহারের ছাত্র শ্রীবাস মজুমদার, সে বর্তমানে এসএসকেএম এর মেডিকেলের প্রথম বর্ষের পাঠরত ছাত্র, সাগর দত্ত মেডিকেল কলেজের ছাত্র অষ্টম হেমব্রম, কড়িধ্যার ছাত্রী মৌমিতা দাস, আব্দারপুরের প্রতিবন্ধী ছাত্র মহাদেব শর্মা, খয়রাশোলের ছাত্রী কর্ণিকা নায়েক। এছাড়া বিশেষ আর্থিক সাহায্য করা হয় বাবুইজোড়ের দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ছাত্র কৃষ্ণপদ চৌধুরী ও ময়ূরেশ্বর ব্লকের কনকপুরের ছাত্রী মিনি মন্ডলকে। তিনি আরও জানান, এর আগের বছরগুলো মিলিয়ে আজ অবধি আমাদের সংস্থা থেকে মোট ৪২জন ছাত্রছাত্রীকে এই বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। আমাদের সংস্থা চায়, আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া দু্ঃস্থ মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষায় আলোয় আলোকিত হোক এবং নিজের ভবিষ্যত জীবন সুন্দর গড়ে তুলুক।