সেখ রিয়াজুদ্দিনঃ
খয়রাশোল ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের কারণে চলছিল চাপানোত্তর। যার বহিপ্রকাশ ঘটে ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি কাঞ্চন অধিকারী দলীয় কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে দলীয় কর্মীদের হাতে আক্রান্ত হন। সম্প্রতি ঘটনার সূত্রপাত ঘটে ব্লক স্তরের বিজয়া সম্মেলন ঘিরে। ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি যখন ১০ নভেম্বর বিকাল তিনটার সময় খয়রাশোল দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিজয়া সম্মেলন হবে বলে দলীয় কর্মীদের মধ্যে চিঠি বা ম্যাসেজ মারফত বার্তা দিতে থাকেন ঠিক তখনই অপরপক্ষ পাঁচড়া অঞ্চলের পাইগড়া ফুটবল মাঠে বিজয়া সম্মেলনের প্রচার শুরু করেন। দুই মেরুর চিত্র জেলা নেতৃত্বের কানে পৌঁছলে তড়িঘড়ি দুই গোষ্ঠীর নেতৃত্বের মধ্যে সমন্বয় সাধনের লক্ষ্যে জেলা পরিষদ সভাধিপতি কাজল সেখ তার অফিসে ডাক দেন। সেক্ষেত্রে ব্লক তৃণমূল সভাপতি অনুপস্থিত থাকায় সভা ভেস্তে যায় এবং জেলা নেতৃত্ব পুনরায় নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত খয়রাশোল ব্লকের বিজয়া সম্মেলন স্থগিত থাকবে। এরই মধ্যে সেই ১০ তারিখেই ঘটলো অঘটন। কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার প্রতিবাদে অঞ্চল ভিত্তিক সভা করতে গিয়ে রুপুষপুর অঞ্চলের বারাবন গ্রামে দলীয় কর্মী তথা খয়রাশোল পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ আইনুস খাঁনের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। সেক্ষেত্রে খয়রাশোল ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি কাঞ্চন অধিকারী ও জেলা পরিষদ সদস্য নবগোপাল বাউরীর মাথা ফেটে যায়। যা নিয়ে লোকপুর থানায় তৃণমূল ব্লক নেতৃত্ব, অঞ্চল সভাপতি, কৃষি কর্মাধ্যক্ষ সহ সাতজনের নামে অভিযোগ দায়ের করেন ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি। সেই সমস্ত ঘটনার জের মিটিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে সামঞ্জস্য বজায় রেখে বিজয়া সম্মেলন করার লক্ষ্যে শনিবার সিউড়ি তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়ে তৃণমূল জেলা কোর কমিটির উপস্থিতিতে খয়রাশোল ব্লক তৃণমূল নেতৃত্বদের নিয়ে একটি বৈঠকে মিলিত হন। সেখানে ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি কাঞ্চন অধিকারী সহ কাঞ্চন দে, স্বপন সেন, শ্যামল গায়েন, উজ্জ্বল হক কাদেরি, মৃনাল কান্তি ঘোষ এই ছয়জনের কমিটি গঠন করে দেন এবং আগামী ২ ডিসেম্বর খয়রাশোল গোষ্ট ডাঙ্গাল মাঠে বিজয়া সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় বলে দলীয় সূত্রে জানা যায়। সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কাঞ্চন অধিকারী বলেন গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব মিটে গেছে, খয়রাশোল গোষ্ট ডাঙ্গাল মাঠে বিজয়া সম্মেলন অনুষ্ঠানে দেখবেন আমরা সবাই এক সঙ্গে আছি। যদিও দলীয় কর্মীদের হাতে আক্রান্ত হওয়ার ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে চাননি। বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী জানান কোনো গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব নেই। খয়রাশোল মাঠে পঞ্চাশ হাজার লোকের সমাগম হবে। ব্লক সভাপতির বিরোধী বলে পরিচিত উজ্জ্বল হক কাদেরী বলেন প্রথমতঃ খয়রাশোলে কোনো গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব নেই। দ্বিতীয়ত ২ ডিসেম্বর খয়রাশোল গোষ্ট ডাঙ্গাল মাঠে বিজয়া সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সেই উপলক্ষে আমাদের পাঁচজন এবং ব্লক সভাপতি কে নিয়ে ছয়জনের কমিটি গঠন করে দিয়েছেন বিজয়া সম্মেলনের জন্য।