কৃষির উৎপাদনে ঘাটতি মেটাতে কম খরচে: কম সময়ে শীতকালীন মটরশুঁটি চাষ করার পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি দফতর

সনাতন সৌঃ

মটরশুঁটি শীতকালীন ফসলের মধ্যে অন্যতম ফসল। কাঁচা অবস্থায় মটরশুঁটি খেতেও সুস্বাদু। মটরশুঁটি রান্নার সবজিতে, ডাল বা খিচুড়িতে দেওয়া হলে খাদ্য দারুন জমে ওঠে। তাছাড়া মুখরোচক খাদ্য চানাচুর, চপ, সিঙ্গারা ইত্যাদির সঙ্গে মটরশুঁটির দানা দিলে স্বাদে আলাদা মাত্রা এনে দেয়। এবছর বর্ষা মরশুমে বৃষ্টিজনিত ঘাটতির কারণে জেলাতে যথেষ্ট আশাপ্রদ আমন ধান চাষ হয় নি। আবার অসেচসেবিত এলাকায় জলের অভাবে অনেক চাষী আমন ধান চাষ করতেই পারেনি। যার ফলে এবছর কৃষির উৎপন্ন ফসল উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এই ঘাটতি মেটাতে অতি সহজে কম খরচে মটরশুঁটি চাষ করতে পারলে চাষীরা আর্থিক দিক থেকে বেশ কিছুটা লাভবান হবেন। সেই সব সাত পাঁচ না ভেবে অনাবাদি জমিতে লোকসানের ঘাটতি মেটাতে মটরশুঁটি চাষ করার জন্য জেলা কৃষি দফতর পরামর্শ দিচ্ছেন। মটরশুঁটি বাজারে চাহিদা প্রচুর আছে। ভালো দাম পাওয়া যাবে। তাই বাড়িতে বসে না থেকে অতি সত্বর চাষীদের মটরশুঁটি চাষ করার জন্য নেমে পড়ার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন। এ চাষে খাটুনি কম। খুব বেশি জল লাগে না। খুব বেশি খরচও হয় না। খুব বেশি সময়ও লাগে না। কম সময়ের মধ্যেই মটরশুঁটির ফসল উঠে যায়। তাই মনোনিবেশ করে চাষ করতে পারলেই চাষীরা অধিক ফলন ভালো পাওয়া যাবে।


চাষের পদ্ধতি: – একটু নীচু মাঝারি জমিতে মটরশুঁটি চাষের পক্ষে বিশেষ উপযোগী।আমন ধান তুলে বা অনাবাদি জমিতে এই ফসলের চাষ করা যাবে।আদ্রতাযুক্ত জমিতে হালকা চাষ দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করতে হবে।কৃষি সুপারিশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় জমিতে সার প্রয়োগ করতে হবে। জমিতে জলনিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখতে হবে। জমিতে বরাবর সমানভাবে মই দিতে হবে। তারপর জীবাণুনাশক ওষধ শোধন করে বীজ বপন করতে হবে।লাইন দিয়ে বীজ বুনতে পারলে ভালো সুফল মেলে। বীজ বোনা পাতলা হলে গাছের লতা চারিদিকে শাখা প্রশাখা বিস্তার লাভ করবে। গাছের ফলনও ভালো পাওয়া যাবে।আর যেখানে গাছ ঘন হলে, সেখানে গাছ তুলে পাতলা করতে হবে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে তার পাশাপাশি অন্য গাছ যেন নষ্ট না হয়ে যায়।
সেচের ব্যবস্থা: জমিতে মটর বীজ অঙ্কুরিত হলে হালকা করে সেচ দিতে হবে।জমি ডুবিয়ে সেচ দিলে মটরশুঁটির গাছ পচে যাবার সম্ভবনা থাকে। তাই জমির অবস্থা দেখে গাছে সেচ হবে।
আগাছা দমন: জমিতে নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার করতে হবে।গাছ বিনষ্ট হলে সেক্ষেত্রে গাছ উপুরে ফেলতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে, পাশের সতেজ গাছটি যেন ছিঁড়ে না যায়।
কীটনাশক প্রয়োগ: গাছে ফল ধরার আগেই কৃষি সুপারিশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কীটনাশক ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে। তারপর গাছের অবস্থা দেখে কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে।
ফসল সংগ্রহ: মটরশুঁটির দানা পুষ্ট হলে তুলতে হবে। কাঁচা মটরশুঁটির দানা তোলার সঙ্গে সঙ্গেই বাজারে বিক্রি করতে হবে।তার কারণ খুব দেরি করলেই দানা সতেজ থাকবে না। শুকিয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে। দানা পাকলেই তুলে নিতে হবে।
কৃষি জগতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য চাষের কাজে নেমে পড়লে আর্থিক দিক থেকে চাষীরা লাভবান হবে বলে কৃষি মহল মনে করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *