শম্ভুনাথ সেনঃ
দীর্ঘ ৪৩ বছর ধরে মামলা চলার পর গণহত্যার রায়ে দোষী ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল বীরভূমের সিউড়ি আদালত। উল্লেখ্য, ১৯৮১ সালের ৮ আগস্ট, বর্তমান মল্লারপুর থানার অন্তর্গত কোটগ্রামে ৯ জনকে খুনের ঘটনায় গত ২০ সেপ্টেম্বর দোষী সাব্যস্ত হয় ১৩ জন। খুনের ঘটনায় প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে। অনাদায়ে অতিরিক্ত ১ মাস জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ভট্টাচার্য। পাশাপাশি বাড়িতে আগুন লাগানোর ঘটনায় প্রত্যেককে ৭ বছরের কারাদণ্ড এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ডের সাজা দেন বিচারপতি। এ তথ্য জানিয়েছেন সরকারি আইনজীবী মলয় মুখোপাধ্যায়। এই সাজার বিরুদ্ধে চাইলে উচ্চ আদালতে আবেদন করা যাবে বলে তিনি জানান। খুনের ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, বীরভূমের মাড়গ্রামের বাসিন্দা ওই ৯ জনের খুনের ঘটনায় প্রথমে কোটগ্রামের ৭২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। দীর্ঘদিন মামলা চলার পর হাইকোর্টের নির্দেশক্রমে এই মামলার রায় ঘোষিত হয়েছে। দীর্ঘ সময় মামলা চলাকালীন অভিযুক্ত অনেকেরই মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। কোটগ্রাম থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে মাড়গ্রাম থেকে একটি পরিবারের ৬ ভাই এবং ওই গ্রামের আরও তিন জন তাদের দিদির বাড়ি কোটগ্রামে এসেছিলেন। ঐদিন একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীদের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন তারা। বিবাদ ক্রমশ বাড়তে থাকে, চলে হাতাহাতিও। এরপরই ওই নয় জন একটি বাড়ির ভিতর লুকিয়ে বাঁচার চেষ্টা করে। কিন্তু গোটা গ্রামবাসীদের মদতে বাড়িতে আগুন লাগিয়ে ও লঙ্কার গুঁড়ো ছিটিয়ে তাদের বাড়ি থেকে বের করে এনে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করা হয়। এরপর মৃত পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে কোটগ্রামের ৭২ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়। দীর্ঘ ৪৩ বছর মামলা চলার পর অবশেষে শুক্রবার দোষী সাব্যস্ত হন কোটগ্রামের ১৩ জন। আজ ২৩ সেপ্টেম্বর মামলার সাজা শুনতে সিউড়ি জেলা আদালতের সামনে ছিল উপচে পড়া ভিড়। দীর্ঘদিন মামলা চলার পরেও সঠিক বিচার পেয়েছেন বলে মৃত পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়।