সেখ রিয়াজুদ্দিনঃ
বীরভূম জেলার বোলপুর এলাকার মুলুক গ্রামের চারজন কৃষককে নৃশংস ভাবে খুনের ঘটনায় স্তব্ধ হয়ে ওঠে এলাকা। দিনটা ছিল ১৯৮৭ সালের ১৯ নভেম্বর। জানা যায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে সেদিন সিপিএমের হাতে শহীদ হন চারজন নকশালপন্থী কৃষক কর্মী। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পুত্রকে বাঁচাতে গিয়ে পিতাকেও খুন হতে হয়। সেদিনের বিভৎস দৃশ্য আজও গ্রাম সহ জেলাবাসীর মনে নাড়া দেয়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবছর দিনটি নকশালদের পক্ষ থেকে স্মরণসভা পালিত হয়ে থাকে। এবছরও নকশালপন্থী সংগঠন সিপিআইএম এল, নিউ ডেমোক্রেসির উদ্যোগে যথাযথ ভাবে স্মরণ করা হয়। শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শহীদ পরিবারের লোকজন সহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। শহীদের পরিচয়ে জানা যায় বোলপুর এলাকার মুলুক গ্রামের সেখ জিয়াউদ্দিন, সেখ মান্নান, সুধীর ঘোষ ও নির্মল ঘোষ। স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের জেলা সম্পাদক শৈলেন মিশ্র। তিনি তার বক্তব্যের মাধ্যমে বলেন-“জাস্টিস ওয়াজ ডিলেট, বাট নট ডিনায়েড”। এছাড়াও বলেন দীর্ঘ ২২ বছর লড়াইয়ের পর ২০০৯ সালের ৩১ মার্চ সিপিএমের ৪৬ জন কর্মীর যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ঘোষণা করেন আদালত। ৪৭ সালের পরবর্তীতে ভারতে একসাথে এত জনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত হয়নি। সেই অর্থে মুলুক হত্যাকাণ্ডের রায় একটি ঐতিহাসিক রায় বলে ব্যাখ্যা করেন। তিনি আরও বলেন দলের আন্তরিক প্রচেষ্টায় চারটি পরিবারের ক্ষতি পূরণের লক্ষ্যে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। সেখানে বিচারপতি পরিবার প্রতি দুই লক্ষেরও বেশি টাকা ক্ষতি পূরণ দেওয়ার আদেশ দেন এবং সেটা আদায়ও হয়েছে বলে জানান। তিনি আরও বলেন মৌলবাদীদের শক্তির দাপট দিনদিন বাড়ছে। অবৈজ্ঞানিক চিন্তাভাবনা বাড়ছে, এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। বর্তমান ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। তবেই আমরা এক সুখী ভারতবর্ষ গড়তে পারবো।