
সনাতন সৌঃ
রুট থাকা সত্ত্বেও অধিকাংশ বেসরকারি আসানসোল ও বর্ধমান বাস চিনপাই গ্রামের ভিতর দিয়ে না গিয়ে হাইরোড দিয়ে চলে যাচ্ছে। যার ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছে দুবরাজপুর ব্লকের চিনপাই সহ একাধিক গ্রামের মানুষ। এবিষয়ে সদাইপুর থানা, আরটিও অফিস এবং বীরভূম জেলা প্রশাসনকে বারবার জানিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে এলাকার বাসযাত্রীদের। এই প্রসঙ্গে বলা যায়, চিনপাই, বিশালপুর, আলিপুর, এলেমা, তাপাসপুর, কলোনি, মোদোপা, আলালচক, হোসেনবাজার, নারায়নপুর, রাধামাধবপুর, কমলপুর সহ একাধিক গ্রামের বাসিন্দারা চিনপাই কালীতলা ও স্কুল মোড় বাসস্ট্যান্ডে বাস ধরে গন্তব্যে যায়। এখানে রয়েছে একটি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়, একটি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি শিশু শিক্ষাকেন্দ্র, গ্রামীণ ব্যাংক, গ্রামপঞ্চায়েত অফিস, গ্রামীণ পাঠাগার, হেলফ সেন্টার। অথচ জেলা প্রশাসনের কোনো হেলদোল নেই।বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকা, গ্রামপঞ্চায়েত কমী,ব্যাংক কমী,আশাকমীরা কর্মসূত্রে বাঁধেরশোল,বোলপুর,সিউড়ি, কচুজোড়,হেতমপুর,পাঁচড়া, দুবরাজপুর,পানাগড় সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে চিনপাই গ্রামে আসা যাওয়া করেন। প্রতিদিন কর্মসূত্রে বিভিন্ন পেশার মানুষজনকে চিনপাই গ্রামে আসতে হয় । সগড়,জাম্বুনি, বাঁধেরশোল,কচুজোড় থেকে পড়ুয়ারা বাসে করে চিনপাই গ্রামের উচ্চবালিকা বিদ্যালয় এবং উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে আসে । চিনপাই গ্রামে বাস না ঢোকায় তাদের হাইরোড থেকে হেঁটে প্রাণে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতে হয়। অনেক সময় দেখা গেছে যে, পথযাত্রীরা দূর্ঘটনায় কবলে পড়ে।গ্রামবাসীদের অভিযোগ, “সিউড়ি থেকে আসানসোল ও বর্ধমান যাওয়া এবং সিউড়ি ফেরার বেসরকারি বাসের রুট চিনপাই গ্রামের ভিতর দিয়ে কিন্ত ইচ্ছাকৃতভাবে বাসের চালক খালাসীরা বাসগুলোকে চিনপাই গ্রামের ভিতর দিয়ে না গিয়ে হাইরোড দিয়ে নিয়ে চলে যায় । বারবার বলা হলেও তারা ভ্রূক্ষেপ করে না ।ফলে আমরা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়ি অথচ বাসগুলো চিনপাই গ্রামের ভিতর দিয়ে গেলে প্রত্যেক বাসই ভালোয় যাত্রী পায় । এই প্রসঙ্গে আরো বলা যায় যে,২০২০ সালে করোনার পরবর্তী সময়ে বাস চালু হওয়ার পর এইরকম করেছিল কিন্তু তখন আরটিও অফিসে লিখিত জানানোয় সমস্যার সমাধান হয়েছিল । তারপর প্রশাসনের ঢেলেমির জন্য সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া দুবরাজপুর, পান্ডবেশ্বরে মালপত্র তোলা নামানোর সময় ইচ্ছে করে দেরি করে তখন কিছু হয় না কিন্তু চিনপাই গ্রামের ভিতর দিয়ে যাওয়ার সময় বাসকমীদের যতো দেরি হয়ে যায় ।” এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে বরাকর-সাইথিয়া “সারথী” বাসের কন্ডাক্টর বলেন যে, “আসানসোল যাওয়ার সময় চিনপাই গ্রামের ভিতর দিয়ে গেলে বাঁকুড়া বাস ওভারটেক করে দেয়, ফলে আমরা যাত্রী পায় না ।” আসানসোল -জঙ্গীপুর ‘লাকি’ বাসের খালাসী বলেন যে,আসানসোল যাওয়ার সময় দুবরাজপুর জ্যামের জন্যই চিনপাই ঢুকি না ।” আসানসোল- বীরচন্দ্রপুর-রামপুরহাট বাসের কন্ডাক্টর বলেন যে, “চিনপাই গ্রামে ভালো প্যাসেঞ্জার পায় কিন্তু সিউড়ি যাওয়ার সময় দুবরাজপুরে বালির গাড়ীর জন্য এবং আসানসোল যাওয়ার সময় সিউড়ি আব্দারপুর উড়ালপুল তৈরিতে যানজটের জন্যই চিনপাই ঢুকি না ।” আসানসোল-জঙ্গীপুর “বাবুজী” বাসের কন্ডাক্টর বলেন যে, “আসানসোল যাওয়ার সময় দেরি হয়ে যায় তাই চিনপাই ঢুকি না ।” এই ব্যাপারে বীরভূম জেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শুভাশীষ মুখোপাধ্যায় বলেন, “লোকাল বাস এবং এক্সপ্রেস বাস একই সময়ে হয়ে যাওয়ার জন্য কিছু আসানসোল ও বর্ধমান বাস চিনপাই ঢুকছে না । তাতে গ্রামবাসীদের অসুবিধা হওয়ার কথা নয় । সে কথা আমি আরটিও এবং ডিএমকে জানিয়েছি । সাউথ বেঙ্গল স্টেট বাস চিনপাই ঢুকছে না তারবেলায় তো চিনপাই গ্রামের লোকজন ডিএমকে ডেপুটেশন দিচ্ছেন না কেন?” সমস্যার সমাধান না হলে ভবিষ্যতে বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে চলেছে চিনপাই সহ একাধিক গ্রামের মানুষ ।


