বামাক্ষ্যাপার ১১৫ তম তিরোধান দিবস উদযাপিত হল তাঁর জন্মভূমি বীরভূমের আটলা’য়

শম্ভুনাথ সেনঃ

“আটলা বামাক্ষ্যাপা বাবা স্মৃতিরক্ষা সমিতি’র” উদ্যোগে ১ শ্রাবণ বামাক্ষ্যাপার ১১৫ তম তিরোধান দিবস নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়। সকাল থেকেই বামাক্ষ্যাপার জন্মভূমি আটলায় নাম, গান, পূজা, পাঠ ও তাঁর জীবন বৃত্তান্ত নিয়ে আলোচনা করেন ভক্ত শিষ্যরা।
উল্লেখ্য, ১২৪৪ সনের ফাল্গুন মাসের শিবচতুর্দশী তিথিতে বীরভূমের তারাপীঠ সংলগ্ন খরুণ গ্রাম পঞ্চায়েতের “আটলা” গ্রামে বামাক্ষ্যাপার জন্ম। মাত্র ৭৪ বছর বয়সে ১৩১৮ বঙ্গাব্দের শ্রাবণ মাসের এমন এক কৃষ্ণা অষ্টমী তিথিতে ভবলীলা শেষ করে মাতারার শ্রীচরণে বিলীন হন। তাঁর দেহ সমাধিস্থ করা হয় তারাপীঠ মহাশ্মশানে। উল্লেখ্য, পঞ্চপীঠের বীরভূমে এই তারাপীঠ এখন “সিদ্ধপীঠ” রূপে চিহ্নিত হয়েছে। বছরভর নানা ধর্মীয় উৎসব অনুষ্ঠিত হয় তীর্থভূমি তারাপীঠে। তারাপীঠ শক্তি সাধনার এক পুণ্যভূমি। বীরভূমের তারাপীঠকে বিশ্বের দরবারে চিনিয়ে দিয়েছেন সাধক বামাক্ষ্যাপা। তামাম ভারতবাসীর কাছে সাধক বামাক্ষ্যাপা বাংলার শক্তি সাধনার এক শক্তিশালী সাধক। সহজ-সরল জীবন যাত্রা ও অকৃত্রিম ভক্তিবিশ্বাসী আত্মভোলা এই সাধকের ‘মা’ ‘মা’ ধ্বনিই ছিল তাঁর সাধনার মূল মন্ত্র।


১২৭৪ বঙ্গাব্দে মাত্র ৩০ বছর বয়সে তিনি মাতৃসাধনায় সিদ্ধিলাভ করেন। বামাচরণ হয়ে যান সাধক বামাক্ষ্যাপা। মূলতঃ তখন থেকেই দেশ বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে তারাপীঠের মাহাত্ম্য। বীরভূমের রামপুরহাট ২ নম্বর ব্লকের দ্বারকা নদের তীরে গড়ে উঠেছে এই তারামায়ের মন্দির। বীরভূমের ঢেকার রাজা রামজীবন রায়চৌধুরী ১৭০১ খ্রিস্টাব্দে তারামায়ের মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। ক্রমে তা কালের গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। বর্তমান এই মন্দিরটি ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দে মল্লারপুরের দানবীর জগন্নাথ রায়ের অর্থানুকূল্যে নির্মিত হয়েছে। ধর্ম আজও মানুষকে রক্ষা করে। এই বিশ্বাস আর ভক্তির টানে লক্ষ লক্ষ সংসারী মানুষ শান্তির সন্ধানে বছরভর ছুটে আসেন বামাক্ষ্যাপার পুণ্যভূমিতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *