
শম্ভুনাথ সেনঃ
আজ বাইশে আগস্ট কৌশিকী অমাবস্যা। তন্ত্রক্ষেত্র তারাপীঠ সেজে উঠেছে এক অন্য সাজে। তারামায়ের ভক্তদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। প্রতি বছরের মতো এবারও তারাপীঠে মহা ধুমধামে পালিত হচ্ছে কৌশিকী অমাবস্যা। দিনভর হাজার হাজার মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে মা তারার দর্শনের অপেক্ষায়। সারাদিন ধরে রীতি মেনেই চলছে পুজো অর্চনা। কথিত আছে এই কৌশিকী আমাবস্যার রাতে তারাপীঠের মহাশ্মশানে সাধনা করে মা তারার দর্শন পেয়েছিলেন সাধক বামদেব। সেই উপলক্ষে প্রতিবছর এই দিনটিতে অগণিত পূর্ন্যার্থীর ভিড় হয় তারাপীঠে।

তারাপীঠে মা তারার মন্দিরের পাশেই দ্বারকা নদীর পাড়ে রয়েছে তারাপীঠ মহাশ্মশান। তারাপীঠের এই মহাশ্মশানের পঞ্চমুন্ডির আসনে বসে সপ্তঋষি বশিষ্ট মুনি তপস্যা করে মা তারার দর্শন পেয়েছিলেন। তারপর কৌশিকী অমাবস্যার তিথিতেই এই শ্মশানের শ্বেতশিমুল বৃক্ষের তলায় সাধনা করে মা তারার দর্শন পেয়ে সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেছিলেন সাধক বামদেবও। সেই সময় থেকেই মহাসমারোহে কৌশিকী অমাবস্যা পালিত হয়ে আসছে তারাপীঠে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই কৌশিকী অমাবস্যার তিথিতে তারাপীঠের মহাশ্মশানে তন্ত্র সাধনা করতে আসেন বহু তন্ত্রসাধক। মহাশ্মশানে জ্বলে ওঠে হাজার হাজার হোমকুণ্ড। মা তারার দর্শন, সাধনায় সিদ্ধিলাভ পাওয়ার আশায় তারাপীঠে ভিড় জমিয়েছেন তন্ত্রসাধক থেকে সাধারণ পূর্ন্যার্থীরাও।

তারাপীঠে আসা পূণ্যার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে মা তারার পুজো দিতে পারেন তার জন্য সব রকম ব্যবস্থা করেছে বীরভূম জেলা পুলিশ ও তারাপীঠ মন্দির কমিটি। তারাপীঠ মন্দিরের প্রবেশ পথ গুলিতে বসানো হচ্ছে মেটাল ডিটেক্টর গেট। তারাপীঠ মন্দির ও এলাকা জুড়ে বসানো হয়েছে সিসি টিভি ক্যামেরা। মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশের জন্য তৈরী করা হয়েছে অস্থায়ী বাঁশের ব্যারিকেড। মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে ১৭৫ জন বেসরকারি নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। বিশৃঙ্খলা ও নাশকতা এড়াতে রাজ্য পুলিশের ৩০০ আধিকারীক সহ ১০০০ জন পুলিশ কর্মী এবং ১৭০০ সিভিক ভল্যান্টিয়ার মোতায়েন করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। রয়েছে মহিলা ও সাদা পোশাকের পুলিশ। তারাপীঠ এলাকা জুড়ে ২০০ টি সিসি টিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। পুলিশের নজরদারির জন্য ১০টি অস্থায়ী ওয়াচ টাওয়ার তৈরী করা হয়েছে। রামপুরহাট-তারাপীঠ রাস্তার আটলা মোড় পর্যন্ত সমস্ত যানবাহন চলাচল করতে পারবে। পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদ ও জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি বিভাগ থেকে পানীয় জলের পাউচ বিতরণ করা হয়।

