
সেখ রিয়াজুদ্দিনঃ
টেট সম্পর্কিত সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে আইনি লড়াই সহ শিক্ষকদের চাকরি সুরক্ষার দাবি নিয়ে বৃহস্পতিবার রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর উদ্দেশ্যে ডেপুটেশন প্রদান করা হয় জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক এর মাধ্যমে। বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে দাবি সম্বলিত পোস্টার ও মিছিল সহযোগে ডেপুটেশন প্রদান করা হয় । দাবি অনুসারে জানা যায় যে, গত ১ সেপ্টেম্বর মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট কয়েকটি রাজ্যের সংখ্যালঘু স্কুল এবং প্রাইভেট স্কুলের শিক্ষকদের যোগ্যতার মান এবং পদোন্নতির বিষয়ে টেট সংক্রান্ত রায় দিয়েছেন। কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষকদের মধ্যে টেট পরীক্ষা দিয়ে নিযুক্ত হননি এবং অবসরের জন্য ৫ বছরের বেশি বাকি রয়েছে তাঁদের টেট পরীক্ষা দিয়ে গুণমান বজায় রাখতে এ রাজ্যে তড়িঘড়ি করে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে লাগু করবার জন্য রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ বিজ্ঞপ্তি (2104/WBBPE/2025/1242L-09/25) জারি করেন। সেক্ষেত্রে শিক্ষকদের বায়োডাটা জমা দিতে বলেছেন। পর্ষদের এরূপ সিদ্ধান্তে শিক্ষক মহলে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।

সেই সাথে প্রশ্ন উঠেছে যে গত ১৬ মে সুপ্রিম কোর্ট কর্মচারীদের বকেয়া ২৫ শতাংশ ডি এ চার সপ্তাহের মধ্যে প্রদানের রায় দিলেও তা কার্যকর না করে অদ্যাবধি বিচারাধীন করে রাখা হয়েছে কেন? কেন্দ্রীয় শিক্ষার অধিকার আইন ২০০৯ কে ভিত্তি করে যদি এই রায় হয় তবে তার রেক্ট্রোস্পেকটিভ এফেক্ট দিয়ে পুরোণো শিক্ষকদের ঘাড়ে এই কোপ ফেলা হবে কেন? শিক্ষা সংবিধানের যৌথ তালিকায় থাকা সত্ত্বেও রাজ্য চুপ কেন? রাজ্যের এহেন অগণতান্ত্রিক আচরণের প্রতিবাদ জানিয়ে বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে আজকের ডেপুটেশন প্রদান কর্মসূচী বলে সংগঠন সূত্রে খবর। তাদের আরো বক্তব্য বাস্তবে টেট পাশের সঙ্গে শিক্ষার মান বৃদ্ধির কোনো সম্পর্ক নেই। কেন্দ্র ও রাজ্যে রাজ্যে সরকার গুলোর শিক্ষা স্বার্থবিরোধী নানান নীতিই শিক্ষার মানের অবনমনের সমূহ দায়ী। আর তার দায় শিক্ষকদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই রায় তাকেই স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। সংগঠনের জেলা সম্পাদিকা ফরিদা ইয়াসমিন অভিযোগের সুরে বলেন সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্র ও রাজ্যের নেতা মন্ত্রীদের কোন বক্তব্য শোনা যায়নি। টেট এর মাধ্যমে শিক্ষকদের মধ্যে যোগ্য অযোগ্য নির্ধারণ হলে তাকে ভিত্তি করে সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ অভিভাবকদের অনীহা আরও বৃদ্ধি পাবে। ফলশ্রুতিতে স্কুলের সংখ্যা কমবেই এবং সেই সঙ্গে সরকারের দায়বদ্ধতা কমবে। তিনি উদ্ভুত সমস্যা সমাধানে শিক্ষক সংগঠন গুলোর মতামত গ্রহণ এবং শিক্ষকদের চাকরি সুরক্ষিত করার প্রয়োজনে শিক্ষামন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি তোলেন।
