পৌষমেলা নিয়ে ধোঁয়াশা, দ্বিপাক্ষিক বৈঠকেও কাটলো না জট

সেখ রিয়াজুদ্দিনঃ

বীরভূমের ঐতিহ্যমন্ডিত শান্তিনিকেতন পৌষমেলা নিয়ে লেগে আছে সংশয়, কাটছে না জট। পৌষ মেলা হবে কি হবে না – বুধবার বিশ্বভারতী ও বোলপুর পৌরসভার বৈঠকের পরেও নিশ্চিত উত্তর তথা কাটলো না জট। জানা গেছে, দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে উভয় পক্ষই মেলার আয়োজন সংক্রান্ত বিভিন্ন অসুবিধার কথা তুলে ধরেছেন।এবং সেই মতামতের নিরিখেই ফের একপ্রস্থ আলোচনার পরেই মিলবে ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলার ভবিষ্যত কি? রাজ্যের বাইরে থাকায় বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। উল্লেখ্য ২০২০ সালে করোনা আবহের জন্য পৌষমেলা বন্ধ রাখা হয়েছিল৷ ২০২১ সালে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় বোলপুর-শান্তিনিকেতনবাসী, স্থানীয় ব্যবসায়ী থেকে পড়ুয়া, আশ্রমিক সকলেই চেয়েছিলেন করোনাবিধি সতর্কতা অবলম্বন করেই অনুষ্ঠিত হোক ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা৷ কিন্তু, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ তাতে সায়দেয়নি করোনার অজুহাতে। বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ নামক সংগঠনের পক্ষ থেকে এবং বোলপুর পৌরসভার সহযোগিতায় বোলপুর ডাকবাংলো মাঠে পৌষমেলার আদলে বিকল্প মেলার আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়। এবছর মেলা হবে কি না সেই কৌতূহলের মাঝেই মেলার আয়োজক শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট লিখিতভাবে জানিয়ে দেয় পূর্বপল্লীর মাঠে মেলার আয়োজন করতে তারা অপারগ। কারণ হিসাবে তুলে ধরা হয় জলের অপ্রতুলতার কথা। বোলপুর পৌরসভাকে লেখা চিঠিতে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট উল্লেখ করে, মেলা আয়োজন করার জন্য সবচেয়ে বেশি যা প্রয়োজন তা হল জল। কিন্তু ভুবনডাঙ্গায় যে চারটি বাঁধ রয়েছে সেই বাঁধগুলি আবর্জনা এবং কচুরিপানায় ভর্তি। এদিকে মেলাও আসন্ন, এই সময়ের মধ্যে উক্ত বাঁধগুলি মেরামত করাও অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে এ বছর পৌষমেলার জন্য পূর্বপল্লীর মাঠ ভাড়া চেয়ে বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে চিঠি দেয় বোলপুর পৌরসভা। পালটা চিঠি দিয়ে মেলা সংক্রান্ত বৈঠকে বোলপুর পৌরসভাকে ডাকে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। সেই মত এদিন বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দুপক্ষের বৈঠক হয়৷ প্রায় দু’ঘন্টা বৈঠক চলে কিন্তু কোনও রফাসূত্র বা সমাধান বের হয়নি। অনিশ্চয়তার মধ্যেই থেকে গেল এবারেরও পৌষমেলা। বৈঠক শেষে বোলপুর পৌরসভার পৌরপ্রধান পর্ণা ঘোষ বলেন, “মেলা নিয়ে বোলপুর পৌরসভা ও বিশ্বভারতী পরস্পর সুবিধা অসুবিধার কথা নিয়ে আলোচনা হয়৷ উপাচার্য ছিলেন না, উনি ফিরলে আজকের বৈঠকের আলোচনা শুনে সিদ্ধান্ত নেবেন। আমরা চাই পূর্বপল্লীর মাঠেই পৌষমেলা হোক। বিশ্বভারতীকে ছাড়া তো তা সম্ভব নয়।” অপরদিকে বিশ্বভারতীর তরফে কিশোর ভট্টাচার্য বলেন, “ঐতিহ্য মেনে সব মানুষকে নিয়ে আমরা চাই মেলা করতে। সেই মত ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। বোলপুর পৌরসভাকে বাদ দিয়েও মেলা হতে পারে না৷ উপাচার্য ফিরলে আমরা বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেব।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *