বীরভূম: পণ্ডিতপুর গ্রামে “নবান্ন উৎসব”কে কেন্দ্র করে গ্রামীণ সংহতির বার্তা

শম্ভুনাথ সেনঃ

বীরভূমের গ্রামে-গঞ্জে সারা অগ্রহায়ণ জুড়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে নবান্ন উৎসব। নতুন চালে প্রস্তুত পরমান্ন গ্রহণের স্বাদ পেতে তাই বছর পর প্রতীক্ষা থাকেন গ্রামের মানুষজন। আতপ চালের গুঁড়ো জলে গোলা আলপনায় সেজে ওঠে ঘরের উঠোন চৌকাঠ। সেজে উঠে দেবস্থান, পূজা মন্ডপ। নতুন ধানের আতব চাল, চিঁড়ে, গুড়, দুধ, কলা, আখ, আদা, মুলো দিয়ে নৈবেদ্য সাজানো হয় কুলদেবতার উদ্দেশ্যে। মাঠে মাঠে ধান পাকলেই পল্লীর কুঁড়েঘরে ইন্দ্রলক্ষ্মী, মুঠআনা, চাউরি দেওয়া এমন কতসব পারিবারিক, সামাজিক উৎসবে মিলিত হয় গ্রামবাসীরা। আর নবান্ন উৎসবে সারা বছরের ক্লান্তি ক্লেদ ঘুচিয়ে সবাই যেন উৎসবে মাতোয়ারা হয়ে যায়। আসলে এই উৎসবকে ঘিরে বজায় থাকে গ্রামীণ সংহতি। বীরভূমের দুবরাজপুর ব্লকের পণ্ডিতপুর গ্রামে আজ ১৫ অগ্রহায়ণ মোদক সম্প্রদায়ের নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত হয় “গণেশ জননী” পূজা। পুজোর পরম্পরা অনুসারে পরিবার পিছু একটি করে আলপনা আঁকা ঘট স্থাপন করা হয় গণেশ জননী মন্দিরে। চলে হোম-যজ্ঞ, পুজো-পাঠ, প্রসাদ বিতরণ। পুজো শেষে পুরোহিত নারায়ণ চক্রবর্তী উপস্থিত ভক্তদের মাথায় ছিটিয়ে দেন শান্তিবারি। এই ভাবেই “নবান্ন উৎসব” কে ঘিরে টিকে থাকে ধর্মীয় লোকায়ত-সংস্কৃতি ও গ্রামীণ সংহতি। উপস্থিত ছিলেন কানাইলাল দাঁ, তুলসীদাস দত্ত, সাধুদাস রুজ, শ্রীধর দে, স্বপন কুমার রুজ প্রমুখ মোদক সমিতির প্রবীন সদস্যরা। এই পুজো অন্ততঃ তিনশ বছরের পুরোনো বলে জানান মোদক সম্প্রদায়ের এক সদস্য পার্থ দত্ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *