মুখ্যমন্ত্রী বীরভূম জেলা সফরে এসে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক, কোর কমিটিতে নতুন মুখ তিন জন

সেখ রিয়াজুদ্দিনঃ

মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফর ঘিরে প্রশাসনিক ব্যস্ততা ছিল তুঙ্গে। পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবেও ছিল নতুন কিছু শোনার আগ্রহ। বিশেষ করে যে মুহুর্তে মুখ্যমন্ত্রী বীরভূম জেলা সফরে আসছেন সেই মুহুর্তে বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অনুব্রত মন্ডল হীন। স্বাভাবিক ভাবেই রাজনৈতিক জল্পনা চলছিল সেই সমস্ত বিষয় ঘিরে। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিকাল ৩.১৪ নাগাদ শান্তিনিকেতনের বল্লভপুর ডাঙায় হ্যালিপ্যাডে নামেন। হ্যালিপ্যাড সংলগ্ন সোনাঝুরি ডাঙায় জয় জোহার প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। এরপর রুপপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় কর্ম তীর্থ হাট প্রদক্ষিণ করেন। সেখানে বীরভূম জেলা শাসককে নির্দেশ দেন হাটটি সচল রাখতে এবং শ্রীবৃদ্ধির জন্য বলেন। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ সাথে নোবেল জয়ী অমর্ত্য সেনকে নিয়ে জায়গা সংক্রান্ত দ্বন্দ্ব। তারই পরিপ্রেক্ষিতে মূলত মুখ্যমন্ত্রী এদিন অমর্ত্য সেনের বাড়ি যান দেখা করতে। জমির নথি নিয়ে এসেছি, শেষ দেখে ছাড়ব, অমর্ত্য সেনের প্রতীচী বাড়িতে বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। অমর্ত্য সেনের জেড প্লাস বিশেষ নিরাপত্তা, প্রতীচী বাড়িতে দেবার নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বলেন ওনার উৎসাহ দেখে ভাল লাগল’ মমতা-আশ্বাসে খুশি জানালেন অমর্ত্য সেন। এরপর সবার নজর ছিল যে দিক ঘিরে অর্থাৎ রাজনৈতিক দলীয় বৈঠক। বিশেষ করে যেখানে তৃণমূল জেলা সুপ্রিমো অনুব্রত মন্ডল হীন। কি বার্তা উঠে আসে সেদিকে সবার নজর। তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ, বিধায়ক, ব্লক সভাপতি সহ মোট ৭০ জন দলীয় প্রতিনিধিদের নিয়ে আমার কুটিরের রাঙাবিতান এ কর্মী বৈঠকে মিলিত হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডল জেলবন্দী থাকায় সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল চার প্রতিনিধির হাতে কোর কমিটিতে। সেই চার প্রতিনিধি ছিলেন যথাক্রমে জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, বিধায়ক অভিজিৎ সিনহা এবং রামপুরহাটের বিধায়ক আশীষ ব্যানার্জী। সেই সংখ্যা ৪ জন থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে এদিন থেকে ৭ জনে। সেখানে অনুব্রত বিরোধী গোষ্ঠীর বলে পরিচিত নেতাদেরও রাখা হয়েছে এদিন গঠিত কোর কমিটিতে। অন্যদিকে এবার খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই যে বীরভূমে সংগঠনের হাল ধরছেন তাও জানিয়ে দিয়েছেন। নতুন মুখ হিসেবে কমিটিতে ঠাঁই পেয়েছেন নানুরের তৃণমূল নেতা কাজল শেখের মতো নেতা। যিনি বীরভূমের রাজনীতিতে কেষ্ট বিরোধী বলে পরিচিত। সেই সঙ্গে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ শতাব্দী রায়, বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ অসিত মালকে রাখা হয়েছে কোর কমিটিতে। মূলত বীরভূমে দলকে চাঙা করতে এদিন সব কৌশলই প্রয়োগ করেছে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *