মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফর শেষ হতে না হতেই ফের বোলপুরে সিবিআই এর জিজ্ঞাসাবাদ

সেখ রিয়াজুদ্দিনঃ

মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফর শেষ হয়েছে আজ। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা দিয়ে দলীয় কর্মীদের পিছনে লাগানোর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বুধবার বোলপুর সরকারি মঞ্চ থেকে চাঁছা ছোলা ভাষায় আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের ২৪ ঘন্টা না কাটতেই গরু পাচার মামলায় দীর্ঘদিন পর ফের তৎপর হয়ে উঠলো সিবিআই। উক্ত ঘটনার তদন্তে অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ আপ্ত সহায়ক এবং তার পরিচারককে ডেকে বৃহস্পতিবার জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই আধিকারিকেরা। সিবিআই এর অস্থায়ী ক্যাম্প শান্তিনিকেতনের রতন কুঠিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আপ্ত সহায়ক অর্ক দত্ত এবং পরিচারক বিজয় রজককে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পাশাপাশি বোলপুর এলাকার বাহিরী-পাঁচশোয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শুভঙ্কর সাধু ওরফে ভজন এবং বোলপুর পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিশ্বজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে মুন সহ প্রত্যেককে এদিন জিজ্ঞাসাবাদ করেন গোরু পাচার মামলার তদন্তকারী অফিসার সুশান্ত ভট্টাচার্য। এদের প্রত্যেকের নামে সমবায় ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট রয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে খবর। সেই অ্যাকাউন্টগুলিতে কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে, সেই টাকার উৎস কি, তা জানতেই এই জিজ্ঞাসাবাদ বলে জানান সিবিআই। উল্লেখ্য গত ডিসেম্বর মাসে বীরভূম জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংকের সিউড়ি শাখায় হানা দিয়ে ১৭৭টি ভুয়ো অ্যাকাউন্ট এর হদিস পান তদন্তকারীরা। পরবর্তীকালে ফের উক্ত ব্যাংকে হানা দিয়ে সর্বমোট ৩৩০টি ভুয়ো অ্যাকাউন্টের সন্ধান পাওয়া যায়। তদন্তকারীদের দাবি, কালো টাকা সাদা করতেই সিউড়ি শাখার সমবায় ব্যাংকে ভুয়ো অ্যাকাউন্টগুলি তৈরি করা হয়েছিল। বিভিন্ন প্রত্যন্ত গ্রামের এলাকাবাসীদের নামে ওই অ্যাকাউন্টগুলি রয়েছে। যাদের নামে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল, তারা এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না, অনেকের নামের অ্যাকাউন্ট-এ সই রয়েছে অথচ তারা সেসব সম্পর্কে যেমন কিছুই জানেন না এমনকি তারা সহি পর্যন্ত করতে পারেন না বলে জানা যায়।

প্রসঙ্গত, গরু পাচার কাণ্ডে গত বছরের ১১ আগস্ট, গ্রেপ্তার হন বীরভূম জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। গ্রেফতার হওয়ার পরপরই বোলপুরের অস্থায়ী ক্যাম্প অফিস সহ কলকাতার নিজাম প্যালেসেও ডেকে জেরা করা হয় অনুব্রত ঘনিষ্ঠ হিসেবে একাধিক জনকে। একই ভাবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক অনুব্রত ঘনিষ্ঠ অর্ক দত্তকেও একাধিকবার জেরা করেছেন তদন্তকারী অফিসারেরা৷ এছাড়া, ব্যাঙ্ক কর্মীদেরও নতুন করে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এদিন। এদিন যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তাদের প্রত্যেককে আগেও একাধিকবার জেরার মুখে পড়তে হয়েছে। যদিও এই আকাউন্টগুলির মাধ্যমে সরকারি ধান বিক্রির টাকা লেনদেন হয়েছে বলে সিবিআই আগেই খোলসা করেছে। পরিকল্পনা করেই কি অ্যাকাউন্টগুলি খুলে তার মাধ্যমে কালো টাকাকে চালকলের পথ ধরেই সাদা করা হয়েছে, সেই লেনদেনের বিস্তারিত তথ্য জানতেই জিজ্ঞাসাবাদ বলেই জানা গেছে সিবিআই সূত্রে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *