বিজয়কুমার দাসঃ
সাঁইথিয়া শহরে রেলব্রিজ সংস্কারের দাবি দীর্ঘদিনের। যে কোন কারণেই হোক এই দাবি বারবার উপেক্ষিত হয়েছে। এই ব্রিজ সংস্কারের দাবি নিয়ে স্থানীয় নাগরিক সমাজ অতীতে আন্দোলন করলেও তা ফলপ্রসু হয়নি। সাঁইথিয়ায় ভয়ঙ্কর রেল দুর্ঘটনার সময় ব্রিজটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও জোড়াতালি দিয়ে সারানো হয়েছিল। বর্তমানে ব্রিজটি কমজোরি হয়ে পড়েছে। অপ্রশস্ত এই ব্রিজটির ওপর দিয়ে প্রতিদিন অজস্র ভারি যানবাহন চলাচল করে। ভারি যানবাহন চললে ব্রিজটি দুলে ওঠে। অথচ রেল দপ্তর বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে রেখেছে, ব্রিজটি ভারি যানবাহন চলার ক্ষেত্রে অক্ষম। সেই নিষেধাজ্ঞাকে উপেক্ষা করেই ভারি যানবাহন চলাচল করে। সম্প্রতি মেরামতের জন্য নতুন ব্রিজ বন্ধ থাকার কালে যানবাহন চলাচল বেড়েছে এই ব্রিজের ওপর দিয়ে। লালুপ্রসাদ যাদব, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অধীর চৌধুরী প্রমুখ রেলমন্ত্রী থাকাকালীন শহরবাসী তথা স্থানীয় প্রশাসন ব্রিজ সংস্কারের দাবি তুললেও কাজ হয়নি।
অতি সম্প্রতি শহরে যানজট অসহ্য হয়ে ওঠার ফলে ব্রিজ সংস্কারের দাবি জোরদার হয়েছে। ব্রিজে যানজটে নাকাল শহরবাসী ব্রিজ নিয়ে প্রায়ই প্রশাসনকে এবং রেল দপ্তরকে কটাক্ষ করে মন্তব্যও করে। অবশ্য সাংসদ শতাব্দী রায় কয়েকবার ব্রিজ মেরামতের দাবি তুলেছেন সংসদে। মাস কয়েক আগে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব পুরপিতা বিপ্লব দত্ত ও বিধায়ক নীলাবতী সাহার নেতৃত্বে স্টেশন চত্বরে অবস্থান বিক্ষোভ দেখিয়ে ব্রিজ মেরামতের দাবি তুলেছে। ইতিমধ্যে রেল দপ্তর ও পূর্ত দপ্তরের পক্ষে ব্রিজ এলাকা মাপামাপি শুরু হলে শহরবাসী ব্রিজ মেরামতের আশায় বুক বাঁধে।
৯ মার্চ একটি বহুল প্রচারিত দৈনিকে পূর্ব রেলওয়ে প্রকাশিত টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি অনুসারে ব্রিজটি ভেঙে ফেলা এবং সেই সময়ের মধ্যে সাঁইথিয়া ও বাতাসপুরের মাঝে অস্থায়ী লেভেল ক্রসিং নির্মাণের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের পক্ষে এই বিজ্ঞপ্তি সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে দাবি করা হয়েছে, তৃণমূলের আন্দোলনের ফলেই এই দাবি মান্যতা পেয়েছে। অন্যদিকে তার পরদিনই ১০ মার্চ সাঁইথিয়া বিধানসভা বিজেপি মন্ডল কমিটির যুবমোর্চার আহ্বানে রেলব্রিজের পাশেই ধর্ণামঞ্চ করে বিজেপি নেতৃত্ব অবিলম্বে ব্রিজের কাজ শুরু করার দাবি তুলেছে। এই ধর্ণামঞ্চ থেকে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বকে তীব্রভাবে আক্রমণ করে বক্তব্য রাখেন বিজেপি নেতৃবৃন্দ। তৃণমূলের পক্ষ থেকে পালটা অভিযোগ করে বলা হয়েছে, তৃণমূলের দাবিতেই সংস্কারের কাজ এগিয়েছে। এখন বিজেপি ঘোলা জলে মাছ ধরতে চাইছে।সব মিলিয়ে সাঁইথিয়ার রেলব্রিজ সংস্কার নিয়ে তৃণমূল – বিজেপি দ্বন্দ্ব প্রকট হয়েছে।