বীরভূমের অন্যতম বৈষ্ণব তীর্থভূমি জয়দেব-কেন্দুলিতে আজ উদযাপিত হলো “গীতগোবিন্দ দিবস”

শম্ভুনাথ সেনঃ

আজ ১৭ জুন, বঙ্গাব্দের পয়লা আষাঢ়—-বর্ষাঋতুর প্রথম দিন। আর এই দিনটি বীরভূমের বৈষ্ণব তীর্থক্ষেত্র জয়দেব-কেন্দুলী এলাকার মানুষের কাছে “গীতগোবিন্দ দিবস” হিসেবে চিহ্নিত। উল্লেখ্য, এই পয়লা আষাঢ় “মেঘদূত” লিখেছিলেন কবি কালিদাস, আর দ্বাদশ শতকে প্রেমের কবি জয়দেব গোস্বামী বীরভূমের এই কেন্দুলীর মাটিতে বসেই রচনা করেছিলেন কালজয়ী সংস্কৃত কাব্যগ্রন্থ “গীতগোবিন্দ”। যা বিশ্বের মানুষের কাছে আজও সমান সমাদৃত। কবি জয়দেবের জন্মভূমি অজয় নদের পাড়ে কেন্দুলীর ভক্তিভবনে জয়দেব অঞ্চল সংস্কৃতি সেবা সমিতির আয়োজনে এবারও এই পয়লা আষাঢ় “গীতগোবিন্দ দিবস” উদযাপিত হয়। সেই সঙ্গে সাহিত্য আড্ডার ২৮ তম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠিত হয় সাড়ম্বরে। আসলে আমাদের কৃষিনির্ভর বীরভূম। আর বীরভূমের কৃষি মূলতঃ বৃষ্টিনির্ভর। ৭০ শতাংশ মানুষের জীবন-জীবিকা কৃষির উপর নির্ভরশীল। তাই প্রতিবছর সুচারু বর্ষার প্রার্থনা করেন কৃষকের দল। আর এই বর্ষা ঋতুর আগমনকে বন্দনা করেই গীতগোবিন্দের সেই প্রথম শ্লোক মেঘৈমেদুরমম্বরম বনভুবঃ। এবারও বর্ষা শুরুর প্রথম দিনটিতে গীতগোবিন্দ দিবসে জয়দেব-কেন্দুলির ভক্তিভবনে বসে সাহিত্যের আড্ডা। সভাপতিত্ব করেন লেখক গবেষক সমালোচক ইন্দ্রজিৎ চৌধুরী। প্রধান অতিথি রূপে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক রজত সান্যাল। গীতগোবিন্দের সুর দিয়ে সভার সূচনা করেন সাহিত্যিক শান্তি কুমার রজক। মুখকথা পরিবেশন করেন সমিতির সভাপতি রণজিৎ মুখোপাধ্যায়। এদিন গীতগোবিন্দ পাঠ, কথা, কবিতা, গান আলোচনা চক্র চলে সারা দুপুর। প্রকাশিত হয় “চণ্ডীদাস” পত্রিকার বিশেষ সংখ্যা। এছাড়াও বেশ কয়েকটি পত্র-পত্রিকা এদিন প্রকাশিত হয়। এদিন গান, কথা, কবিতায় অংশ নেন শিল্পী কার্তিক দাস বাউল, নারায়ণ কর্মকার, নীলোৎপল ভট্টাচার্য, আদিত্য মুখোপাধ্যায়, অসীম শীল প্রমুখ। নিয়াজুল হক, দেবযানী দাস সিনহা জেলার এই ২ জন খ্যাতনামা কবিকে সংবর্ধনা জ্ঞাপন করা হয়। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় ছিলেন কবি আনারুল হক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *