সেখ রিয়াজুদ্দিন
গত ২১ শে মার্চ বীরভূম জেলার রামপুরহাটের বগটুই গ্রামের নৃশংস নারকীয় হত্যালীলা যা আজও মানুষের মনে নাড়া দেয়। ঘটনার প্রায় একমাস অতিবাহিত, জলও অনেক দূর গড়িয়েছে। সিট এর হাত থেকে সিবিআই এর কাছে তদন্তভার দেওয়া হয় কোলকাতা উচ্চ আদালতের নির্দেশে। অগ্নিদগ্ধ ঘটিয়ে হত্যার পাশাপাশি উপপ্রধান ভাদু শেখ, দুটি ক্ষেত্রেই তদন্তের নির্দেশ প্রদান করা হয় সিবিআই কে। সিবিআই এর আধিকারিকগন তদন্তের স্বার্থে সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ রামপুরহাট হাসপাতালে, পেট্রলপাম্পের, এছাড়াও ধৃত তৃনমূল নেতা আনারুল হোসেন সহ অন্যান্যদের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা ইত্যাদি কাজকর্ম চালিয়ে অনেক সাফল্য অর্জন করেন। বগটুই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি বগটুই গ্রামের স্বজন হারানো ব্যাক্তিদের সহানুভূতি জানাতে গ্রামে আসেন। এসেই জনসমক্ষে রামপুরহাট এক নম্বর ব্লক তৃনমূল সভাপতি আনারুল হোসেনকে দোষী সাব্যস্ত করে গ্রেফতার করার নিদান দেন পুলিশকে। কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে পুলিশ তারাপীঠ থেকে আনারুল হোসেনকে গ্রেফতার করে। ইতিমধ্যে ব্লক তৃনমূল সভাপতি পদে আনারুল হোসেনকে রাখা না রাখা নিয়ে পূর্বতন এক চিঠি বা মুচলেকা বা সুপারিশ পত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে, যেখানে আনারুল হোসেনকে সভাপতি পদে রাখার সুপারিশ করে স্বাক্ষর করেন ডেপুটি স্পিকার আশীষ ব্যানার্জী। এনিয়ে জেলা তৃনমূল সভাপতি অনুব্রত মন্ডল সংবাদ মাধ্যমে জানান নানা কারণে ব্লক সভাপতি পদ থেকে আনারুলকে সরাতে চেয়েছিলাম কিন্তু আশীষ ব্যানার্জীর অনুরোধে ব্লক সভাপতির পদ থেকে সরানো হয়নি। সেই কথার রেশ কাটতে না কাটতেই মিহিলাল সেখ এবার ফের বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার তথা রামপুরহাট বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক আশীষ ব্যানার্জীর দিকে একগুচ্ছ বাক্য বান তথা অভিযোগের তীর ছুড়ে দেন মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলন করে। এদিন সরাসরি রামপুরহাট এক নম্বর ব্লক তৃনমূল সভাপতি আনারুল হোসেনকে নিয়ে এবার বগটুই কাণ্ডে রাজ্যের ডেপুটি স্পিকার তথা রামপুরহাটের তৃনমুল কংগ্রেসের বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় নামে অভিযোগ তুললেন মিহিলাল সেখ। তিনি আজ সাংবাদিকদের সামনে সরাসরি আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে অভিযোগ তোলেন। মিহিলালের অভিযোগ বগটুই গ্রামে ভাদু সেখ গোষ্ঠীর সঙ্গে বিবাদ মেটানোর জন্য বহু আগেই যাওয়া হয়। কিন্তু আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় সেই বিবাদ মেটানোর কোন উদ্যোগ নেননি বলে অভিযোগ। উপরন্তু আমাদের চিনতে পারেননি সেদিন, জিজ্ঞেস করছিলেন তোমাদের কোথায় বাড়ি রামপুরহাট বগটুই? একপ্রকার লাথি মেরে সেদিন তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। আশিস ব্যানার্জীর সাথে সাথে তার ভাইপো সমুও আমাদের উপর নানাভাবে অত্যাচার করে। আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় আনারুল হোসেনকে দিয়েই এই কান্ড ঘটিয়েছে। এই বিস্ফোরক মন্তব্য বগটুই কাণ্ডে নিহতদের পরিবারের প্রধান মিহিলাল সেখের। তিনি জানান পুরো বিষয়টি সিবিআই এর কাছে অভিযোগ আকারে জানাবেন। ব্লক প্রশাসনের দিকেও খাবার সংক্রান্ত ত্রাণ নিয়ে অভিযোগ করেন। রমজান মাস উপলক্ষে ন্যুনতম খাদ্য তালিকা করে বিডিও-র কাছে পাঠানো হয় কিন্তু আশানুরূপ খাদ্য পাওয়া যায়নি।