সেখ রিয়াজুদ্দিন
বীরভূমের দুবরাজপুর শহরের প্রসিদ্ধ চা বিক্রেতা বিপুল ওঝা। শুধু নিজ স্বার্থে চা ব্যবসা নয়, সমাজের স্বার্থেও কিছু অভিনব ভাবনার প্রতিফলনের চিত্র দেখলো চা খরিদ্দার থেকে এলাকাবাসীরা। দোকানের সূত্রে বিভিন্ন লোকের আনাগোনা, নানা গল্প কাহিনী শুনতে পাওয়া যায় খরিদ্দার সামলাতে সামলাতে। তারই মধ্যে খরিদ্দারদের কথোপকথনে ওঠে আসে গ্রীষ্মকালীন রক্ত সঙ্কটের কথা, ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তশূন্যতার কথা, থ্যালাসেমিয়া সহ গুরতর জখম ব্যাক্তিদের অসহায়তার কথা ইত্যাদি শুনতে শুনতে দোকানদারের মনে নাড়া দেয়। সেই কথার পরিপ্রেক্ষিতে চায়ের দোকানের আড্ডা থেকে রক্তদান শিবির করার ভাবনা আসে বিপুলের মনে। বীরভূম ভলান্টারী ব্লাড ডোনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের চায়ের আড্ডায় বিপুল বাবুর ইচ্ছে হয় ব্লাড ব্যাঙ্ক যেন শূন্য না হয়, পূণ্যের লক্ষ্যে তাই তিনি অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতা নিয়ে একটি রক্তদান শিবির করার কথা চিন্তা করেন। চায়ের দোকানের এরকম একটা উদ্যোগ নেওয়ার জন্য সংস্থার সদস্যরা ব্যবস্থা করে দিয়েছেন রক্তদান শিবিরের, সেই চায়ের দোকানেই। রাজ্য স্বাস্থ্য ভবনের সম্পুর্ণ বাতানুকূল বাসে এই রক্তদান শিবির করা হয়। জেলার মধ্যে ধারাবাহিক ভ্রাম্যমাণ রক্তদান শিবির শুরু হলো BVBDA এর হাত ধরে চায়ের ছোট্ট দোকান থেকে। এই শিবিরে চা বিক্রেতা বিপুল সহ আরো ২০ জন ব্যাক্তি রক্তদান করেন। সংগঠনের সহ সভাপতি প্রিয়নীল পাল জানান, রাজ্য সরকারের ভ্রাম্যমাণ রক্তদান শিবিরের লক্ষ্য যাতে সবাই রক্তদানে এগিয়ে আসে, সেই লক্ষ্যকে সফল করতেই চায়ের দোকানের আড্ডাকেই বেছে নেওয়া হয়েছে রক্তদান শিবিরের জন্য। এই শিবিরের মাধ্যমে এই সময় রক্তের সংকট অনেকটা বাড়ে, আগামীতেও কমবেশি ২৪ টা রক্তদান শিবিরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জেলা জুড়ে আগামী এক মাসের মধ্যে। উল্লেখ্য ইতিপূর্বে চা ওয়ালা বিপুল ঝা ও তার মা মরনোত্তর চক্ষু দানের অঙ্গীকার করেন। মঙ্গলবার চা ওয়ালার উদ্যোগে আয়োজিত রক্তদান শিবিরে উপস্থিত ছিলেন দুবরাজপুর পৌরসভার পৌর প্রধান পীযূষ পান্ডে, কাউন্সিলর সাগর কুন্ডু, সমাজসেবী স্বরূপ আচার্য, বীরভূম ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স এ্যাসোসিয়েশনের জেলা সহসভাপতি প্রীয়নীল পাল, সদস্য সেখ মোশাররফ, রাজা গড়াই, সায়ন দাঁ প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ।