সেখ রিয়াজুদ্দিনঃ
এজিদ দামেস্কের সিংহাসনে বসার পর মদিনায় দূত পাঠিয়ে ইমাম হুসাইনকে তার কাছে বাইয়াত হতে আহ্বান জানান। ইসলামী আদর্শহীন অধার্মিক এজিদের এই প্রস্তাব তিনি ঘৃণার সহিত প্রত্যাখ্যান করেন। সেই থেকে ঘটনার সূত্রপাত। ১০ই মহররম এজিদ বাহিনী সৈন্যাধ্যক্ষ বলল, হে ইমাম হোসাইন আপনারা বিনা যুদ্ধে আত্মসমর্পণ করুন, আমাদের হাতে ধরা দিন। আমরা আপনাদের প্রাণে মারবো না, শুধু জিয়াদ ও এজিদের কাছে ধরে নিয়ে যাবো। এজিদকে খলিফা বলে আপনি স্বীকার করে নিয়ে তার অনুগত হয়ে থাকলে তিনি আপনাকে রাজার হালে রাখবেন। ইমাম হোসাইন গর্জে উঠলেন বললেন- হে দুরাচার এজিদের দল। হে বেইমান কুফার অধিবাসী। তোমরা জেনে রাখো আমি মহাবীর আলীর পুত্র। আমি শির দেবো, তবু শির নোয়াবো না। হযরত ইমাম হোসাইন ও তার বীর সহচরবৃন্দ ন্যায়, সত্য ও গণতন্ত্রের জন্য, ইসলাম ও তার আদর্শের জন্য স্বেচ্ছায় নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেন। সেই থেকে আজ মুসলিম সম্প্রদায়ের শোকের পর্ব মহরম। অন্যান্য জায়গার পাশাপাশি রাজনগরেও যথাযথ মর্যাদার সাথে এই মহরম পর্ব পালিত হল। আরবি মহরম মাসের ১০ তারিখে আজকের দিনে ইরাকের কারবালা প্রান্তরে হযরত মুহাম্মদ দৌহিত্র ইমাম হোসেন এজিদ বাহিনীর কাছে সপরিবারে নিহত হন। সেই ঘটনাকে স্মরণ করে মহরম পর্ব পালিত হয়ে আসছে। রাজনগরের বিভিন্ন গ্রামের তাজিয়া, নিশান সহকারে শোভাযাত্রা রাজনগর ইমামবাড়া প্রাঙ্গনে এসে সারিবদ্ধভাবে রাখা হয় তাজিয়া গুলোকে। ইমামবাড়া প্রাঙ্গণে খেলার আয়োজন করা হয়। এবারে ছয়টি গ্রামের ছয়টি তাজিয়া এসেছে এই ইমামবাড়া প্রাঙ্গনে। রাজনগরে এই মহরমকে ঘিরে এখানে একদিনের একটি মেলাও বসে। আজকের এই মহরম পর্বের অনুষ্ঠান দেখতে উপস্থিত হন এসডিও সদর অনিন্দ্য সরকার, সিউড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক বিকাশ রায় চৌধুরী, রাজনগরের বিডিও শুভদীপ পালিত, রাজনগর থানার ওসি দেবাশিস পন্ডিত, রাজনগর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুকুমার সাধু, রাহে ইসলাম সমাজ কল্যাণ সোসাইটির সম্পাদক আবুল ফজল খান, সভাপতি নাজমুল আলম, শান্তি কমিটির সম্পাদক প্রদীপ দে, রাজনগর রাজ পরিবারের সদস্য মহ: সফিউল আলম সহ বহু বিশিষ্টজনেরা। ঐতিহাসিক ও প্রাচীন মহরম মহা মিলন মেলা উপলক্ষে একান্ত সাক্ষাৎকারে বিস্তারিত বিবরণ দেন সোসাইটির পক্ষে সেখ নাজু।