একমাত্র উপরওয়ালা ছাড়া কারো কাছে মাথা নত করিনি, আর করব না–কাজল সেখ

সেখ রিয়াজুদ্দিনঃ

খয়রাশোল ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে নব নির্বাচিত বীরভূম জেলা সভাধিপতি ফাইজুল হক ওরফে কাজল সেখকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয় শনিবার খয়রাসোলের দলীয় কার্যালয়ে। পাশাপাশি একই মঞ্চ থেকে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি খয়রাশোল চক্রের তরফেও সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। সংবর্ধনার পরবর্তীতে গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের সদস্য-সদস্যা সহ দলীয় কর্মীদের উদ্যেশ্যে এক সভায় বক্তব্য রাখেন কাজল সেখ। লক্ষনীয় বিষয় খয়রাসোল ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি খোদ কাঞ্চন অধিকারী এদিনের সভায় অনুপস্থিত ছিলেন। সূত্রের খবর অনুযায়ী গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের জেরে জর্জরিত ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি নিজে থেকেই পদত্যাগ করতে চেয়ে বৃহস্পতিবার জেলা তৃণমূল কংগ্রেস কোর কমিটির কাছে আবেদন পত্র পাঠিয়েছেন। এদিনের মঞ্চ থেকেই কাজল সেখ জানান ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি কাঞ্চন অধিকারীর সাথে আমি এবং জেলা পরিষদের সদস্য অরুণ চক্রবর্তী ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি শারীরিক অসুস্থতার কারনে আসতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন। এরপর দলীয় নেতাকর্মী ও ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে নির্বাচিত দলীয় সদস্যের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জেলা সভাধিপতি কাজল শেখ বলেন ২০১১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত এই কম সময়ের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভাবনীয় পরিবর্তন ঘটিয়েছেন।তিনি যে প্রকল্পগুলি চালু করেছেন জন্ম থেকে মৃত্যু প্রতিটি ক্ষেত্রে সেইগুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা। এগুলোই একমাত্র লক্ষ্য সেই মতো আমাদের পথ চলার পাথেয়। মুখ্যমন্ত্রীর মানবিক প্রকল্প গুলির সুবিধা মানুষের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া চেষ্টা করুন। বাড়ি বাড়ি প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছে দিলে তাহলে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে আর বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাইতে হবে না। বীরভূম জেলার দুটি লোকসভা কেন্দ্রেই তৃণমূলের জোড়া ফুল প্রতীকে যেই প্রার্থী দাঁড়াক না কেন বিপুল ভোটে জয় যুক্ত হবেন বলে আশাবাদী। তিনি তার ব্যক্তিগত ইতিহাস তথা রাজনৈতিক জীবনীর কথা তুলে ধরে বলেন দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে রাজনীতি করছি। অন্যায় অত্যাচারের প্রতিবাদ করতে গিয়ে দুটি দাদা এবং বাবাকে হারিয়েছি, সেইসাথে সহযোদ্ধাদেরও হারাতে হয়েছে। বাবাকে চোখের সামনে খুন হতে দেখেছি। খয়রাশোল ব্লকের বুকেও অনেক খুনোখুনি হয়েছে। তবে এখন খুনোখুনির রাজনীতি বন্ধ হয়ে গেছে। সদ্য পঞ্চায়েত ভোটে কোনো খুনোখুনি হয়নি। সমস্ত স্তরের মানুষ নিজের ভোট নিজে দিয়েছে স্বাচ্ছন্দ্যে এবং নিরাপদে। তৃণমূল কংগ্রেস জেলার বেশিরভাগ আসনেই জয়ী হয়েছে। জেলার বুকে একমাত্র দুবরাজপুর বিধানসভা তৃণমূলের হাতছাড়া হয়েছে যা নেতাদের বা আমাদের দলীয় কর্মীদের চলার পথে অবশ্যই ভুল ছিল। এই বিধানসভা কেন্দ্রে তাদের হয়ে আমি ক্ষমা চাইছি। আগামী দিনে দুবরাজপুর ব্লক-খয়রাসোল ব্লক নিয়ে একটা টিম করে কাজগুলো আরো শক্তিশালী করার ইচ্ছা রয়েছে। আগামী দিনে বীরভূম জেলা সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে চালাবো। এটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চলার পথ এটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শ। তার বাইরে একটা পা ফেলব না, ফেলতেও দেব না। আমি খাব না- কাওকে খেতেও দেব না বলে দলীয় নেতা কর্মীদের এক প্রকার হুঁশিয়ারি দিয়ে গেলেন খয়রাসোল মঞ্চ থেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *