সেখ রিয়াজউদ্দিনঃ
বীরভূম জেলার দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে লোকপুর থানার ঝাড়খণ্ডের বর্ডারে অবস্থিত বনকাটা গ্রাম। প্রত্যন্ত গ্রামের দুর্গোৎসব ঘিরে মানুষের উৎসাহ উদ্দীপনা তুঙ্গে। এখানকার দুর্গাপূজা সম্পর্কে জানা যায় এবার তাদের দুর্গাপূজা ১৩ বছরে পদার্পণ করল। দুর্গোৎসব সূচনা লগ্নের ইতিহাস সে এক করুন বেদনাদায়ক। গ্রামে যখন দুর্গাপূজা হতো না,তখন বনকাটা গ্রামের ঢিল ছোড়া দূরত্বে ঝাড়খণ্ডের বাগডহরী গ্রামে লোকজন দুর্গাপুজা বা প্রতিমা দর্শন করতে যেতো। কিন্তু সেখানে বাবুদের দুর্গোৎসবে সবার প্রবেশ বা দর্শন ছিল না। দরজার বাইরে থেকেই ঠাকুর প্রণাম বা দর্শন করতে হতো। সে এক ছোঁয়াছুতের ব্যাপার বলে দুঃখের সুরে জানান গ্রামের ব্যক্তিগন। সেই থেকেই গ্রামে দুর্গাপুজোর প্রচলন এর সূচনা এবং সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে বাগডহরী গ্রামে বাবুদের পূজোতে নয় গ্রামেই সমস্ত মানুষ জনকে নিয়ে পূজার আয়োজন করতে হবে। সেই মোতাবেক গ্রামের সকলেই একত্রিত হয়ে গ্রামে পুজো শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় অর্থনৈতিক কাঠামো। গ্রামের বেশিরভাগ মানুষজন কৃষি এবং দিনমজুরের কাজে যুক্ত। এতদ সত্বেও প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় প্রতি বাড়িতেই এক মুঠো করে চাল প্রতিদিন জোগাড় করে রাখতে হবে এবং মাসের শেষে মন্দিরে জমা করা হবে। পরবর্তীতে বাড়ি প্রতি ৩০০ টাকা করে চাঁদা ধার্য করে চলে দুর্গাপুজো। এরপর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অনুদান দেওয়ায় পুজো আরো জাঁকজমক সহকারে শুরু হয় তবে মন্দিরে কাজ এখনো অসম্পূর্ণ। সরকারি নির্দেশিকা মেনেই অনুষ্ঠান সূচি পালিত হয়। দুর্গাপুজো উপলক্ষে গ্রামের কচিকাচাদের নিয়ে নাটক গান নাচ ইত্যাদি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পূজোর কয়েকদিন গ্রামবাসীরা জমজমাট ভাবে আনন্দ উপভোগ করেন সেই কথাই জানালেন গ্রামের লোকজন।