বীরভূমের উপেক্ষিত স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নিয়ে পথ নাটক পরিবেশিত হলো একমাস ব্যাপী জেলাজুড়ে

সনাতন সৌঃ

কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে একমাস ব্যাপী বীরভূমের উপেক্ষিত স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নিয়ে পথ নাটক উদযাপিত হলো জেলা জুড়ে। এর সাথে অনুষ্ঠিত হলো সাড়ম্বরে ভারত অমৃত মহোৎসব। এই উৎসবের অঙ্গ হিসেবে ‘মেরী মাটি মেরা দেশ’ – ‘অমৃত কলস যাত্রা’ শীর্ষক কর্মসূচি হিসেবে কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রকের অধীন ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামার আয়োজনে সারা জেলা জুড়ে পরিবেশিত হলো স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে অনুল্লেখিত উপেক্ষিত অগণিত বীর সন্তানদের জীবন ভিত্তিক নাট্য পরিবেশন। ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামা, নিউ দিল্লির আমন্ত্রণে বীরভূমের ১৯ টি ব্লকে এই বিষয়ে নাটক পরিবেশন করে বোলপুর দ্বারোন্দা ব্লজম থিয়েটার (পার্থ গুপ্ত রচিত ও নির্দেশিত ‘দেশের মাটি’), সিউড়ি রঙ্গসাথী (সত্যজিৎ দাস রচিত ও নির্দেশিত ‘বন্দেমাতরম’), দুবরাজপুর সেঁজুতি (সুমনা চক্রবর্তী রচিত ও নির্দেশিত ‘অন্তরালে সত্যবালা)। সিউড়ি ইয়ং নাট্য সংস্থা পরিবেশন করে, নলহাটি থানার ঝাউপাড়া গ্রামের বাসিন্দা, বিপ্লবীদের ‘মাসিমা’ নামে খ্যাত, পরাধীন ভারতের অস্ত্র আইন কারাদণ্ডে প্রথম দণ্ডিতা দুকড়িবালা দেবীর জীবন অবলম্বনে নির্মল হাজরা রচিত ও নির্দেশিত জমজমাট নাটক ‘বীরভূমের বীরাঙ্গনা’। স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে উপেক্ষিতা একজন বিপ্লবী নারী “তোমরা যদি দেশের জন্য প্রাণ দিতে পারো, তবে তোমাদের মায়েরাও পারে” – এই মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন, একজন গৃহবধূ, ব্রিটিশ শাসনের পরাধীন শৃঙ্খল থেকে দেশকে মুক্ত করতে তাঁর অবদান ইতিহাসে সম্পূর্ণ উপেক্ষিত থেকে গেছে এই বীরাঙ্গনার। ইয়ং নাট্য সংস্থা প্রযোজিত ‘বীরভূমের বীরাঙ্গনা’ নাটক টি বীরভূমের ৫ টি ব্লকের অন্তর্গত বিভিন্ন বিদ্যালয় সহ বাজার মোড় ইত্যাদি স্থানে পরিবেশিত হয়। নির্মল হাজরা রচিত ও নির্দেশিত নাটকটি সামগ্রিক অভিনয় ও সুন্দরভাবে উপস্থাপনার জন্য সকলের প্রশংসা অর্জন করেছে বলে জানালেন নেহেরু যুব কেন্দ্রের অধিকর্তা মাননীয়া রায়া দাস। নাটকটি দুকড়িবালা দেবীর নিজের গ্রামের বাড়ি নলহাটির ঝাউপাড়া গ্রামে তাঁদের আত্মীয় স্বজন, পাড়া প্রতিবেশীর সামনে পরিবেশিত হলে এক গভীর আবেগঘন পরিস্থিতিতে সকল দর্শক মুগ্ধ ও অভিভূত হয়েছে বলে দুকড়িবালা দেবীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে। প্রতিটি নাট্য দলের নাটক স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে স্থানীয় বীর সন্তানদের ভূমিকার কথা জানতে পেরে ছাত্র ছাত্রী থেকে শিক্ষক শিক্ষিকা সকলেই প্রতিটি নাটকের প্রশংসা করে এই উৎসবের গুরুত্বের কথা উল্লেখ বলেন। কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক, ভারত সরকারের অন্তর্গত ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামার এই উদ্যোগকে প্রশংসা করে তাদের সাধুবাদ জানায়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রকের অধীন ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামার আয়োজন ও আমন্ত্রণে দেশের প্রায় তিনশোটি নাট্যদল, প্রায় দুই হাজারটি স্থানে এই ‘মেরী মাটি মেরা দেশ’ শীর্ষক কর্মসূচি পালন করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *