শম্ভুনাথ সেনঃ
৩ বছর পর ফের পূর্বপল্লীর মাঠেই হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী “শান্তিনিকেতন পৌষমেলা”। ১ ডিসেম্বর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সঞ্জয় কুমার মল্লিকের তত্ত্বাবধানে বিশ্বভারতীর মেলা প্রাঙ্গণে দীর্ঘক্ষন কর্ম সমিতির বৈঠকে এমনটাই সিদ্ধান্ত হয়েছে। হাতে তেমন সময় নেই, তাই আগের মত এত বড় আকারে না হলেও পরিবেশ আদালতের দূষণবিধি মেনে ছোটো করে আয়োজিত হবে পৌষমেলা৷ সেকথা জানিয়েছেন বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে শেষ বার পূর্বপল্লীর মাঠে পৌষমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ২০২০ সালে কোভিদ পরিস্থিতির জন্য মেলা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তারপর থেকেই তৎকালীন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সঙ্গে শুরু হয় রাজ্য সরকারের সংঘাত। তা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক সিদ্ধান্তে সরব হয় তৃণমূল কংগ্রেস, এমনকি বিশ্বভারতীর অধ্যাপক, পড়ুয়া, আশ্রমিক থেকে প্রাক্তনীরাও। তাই ২০২১ ও ২০২২ সালে পূর্বপল্লীর মাঠে পৌষমেলা বন্ধ করে দেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। যা নিয়ে নিন্দার ঝড় ওঠে সর্বত্র। তবে বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ ও বোলপুর পৌরসভার যৌথ উদ্যোগে এই দু’বছর ডাকবাংলো মাঠে বিকল্প মেলার আয়োজন করা হয়৷
গত ৮ নভেম্বর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর মেয়াদ শেষ হয়েছে৷ নতুন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হন সঞ্জয় কুমার মল্লিক। তাই এবার ফের ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা হবে এমনটাই আশা সকলের৷ এই নিয়ে বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতি থেকে শুরু করে পড়ুয়া, শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট, বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ উপাচার্যকে মেলার আয়োজন করার জন্য আগেই ডেপুটেশন দেন। এদিন বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সঞ্জয় কুমার মল্লিকের তত্ত্বাবধানে প্রায় ২ ঘন্টা কর্মসমিতির বৈঠক হয়৷ বৈঠক শেষে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেয় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। তাতে বলা হয়েছে, ফের পূর্বপল্লীর মাঠেই হবে পৌষমেলা৷ তবে পরিবেশ আদালতের ছাড়পত্র মেনে ছোটো করে মেলার আয়োজন করা হবে। তবে আজ ২ ডিসেম্বর শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার সাংবাদিকদের মুখোমুখি জানান, “ছোটো মেলা করা যাবে না, বিগত বছরের ন্যায় একই ভাবেই করতে হবে”। অবশ্য ৩ বছর পর পুনরায় মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিষ্ঠিত পৌষমেলা অনুষ্ঠিত হবে এই খবরে সারা বীরভূমে এখন খুশির জোয়ার।