রাঢ় উৎসবের আয়োজন জয়দেব কেন্দুলিতে

সেখ রিয়াজুদ্দিনঃ

বাংলা লোকসংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে ৮ মার্চ তিন দিন ব্যাপী রাঢ় উৎসবের সূচনা হলো বীরভূমের সাংস্কৃতিক পীঠস্থান জয়দেব কেন্দুলিতে। এদিন জয়দেবের বাউল মঞ্চে উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী অনাথবন্ধু ঘোষ। প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী শুভেন্দু মাইতি, লাল পাহাড়ির দেশে যা গানের জন্য খ্যাত বিশিষ্ট কবি অরুণ চক্রবর্তী, হরকুমার গুপ্ত সহ বহু বিশিষ্ট জনেরা। উদ্বোধনের পর কবি অরুণ চক্রবর্তী বলেন বর্তমান সংস্কৃতি জগৎকে যেভাবে বিকৃত করা হচ্ছে তা দুর্ভাগ্যজনক, এজন্য আমাদেরকে সচেতন হতে হবে। সঙ্গীত শিল্পী তথা অনুষ্ঠানের সভাপতি শুভেন্দু মাইতি বলেন বাংলার শিল্প সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যই মূলত রাঢ় উৎসবের সূচনা। আগামী দিনে এই উৎসব ব্যাপক আকার নেবে। তার আগে জয়দেবের রামপুর এলাকা থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা জয়দেব এলাকা পরিক্রমা করে বাউল মঞ্চে জমায়েত হয়। বিভিন্ন জেলা থেকে আগত আদিবাসী নৃত্য, ঝুমুর গান, রণপা নৃত্য পরিবেশিত হয়। উল্লেখ্য তিনদিন ব্যাপী এই উৎসবে বোলান, আদিবাসী নৃত্য, কবিগান, নাটুয়া ও রণপা নৃত্য, মুসলিম বিয়ের গান, রায়বেশে নৃত্য, বাউল-ফকিরিগান, কীর্তনসহ রাঢ় এলাকার সমস্ত ধরনের লোকসংস্কৃতি পরিবেশনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এছাড়াও তথ্যচিত্র প্রদর্শনী ও সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। উক্ত অনুষ্ঠানের পাশাপাশি জয়দেব ভক্তি ভবনেও একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। চর্যাপদ ও বাংলা সংগীতের বিবর্তনের বিষয়ে আলোচনা করেন ঝুমুর গবেষক কীরিটি মাহাতো, রাঢ়ের লোকসংস্কৃতি ও লোকনৃত্য বিষয়ে আলোচনা করেন আয়েশা খাতুন, রাঢ় বঙ্গে মন্দির মসজিদ ও স্থাপত্য নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক প্রণব ভট্টাচার্য। বীরভূম, দুই বর্ধমান, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, মুর্শিদাবাদ, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাসহ রাঢ় বাংলার বিভিন্ন এলাকার লোকশিল্পী ও সংস্কৃতি মনোজ্ঞ মানুষজন উপস্থিত ছিলেন। উদ্যোক্তাদের পক্ষে সন্তোষ কর্মকার, এন্তাজ আলি, শীতল বাউরী বলেন রাঢ় বাংলার লোকসংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতেই তিন দিন ব্যাপী রাঢ় উৎসবের আয়োজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *