বীরভূমের বনডাঙ্গায় আদিবাসী গৃহবধুর মৃত্যুতে বিক্ষোভ

শম্ভুনাথ সেনঃ

কুসংস্কারের বলি হল এক আদিবাসী গৃহবধূ। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার পরও ওষুধ খেতে দিতেন না স্থানীয় এক ওঝা। তার ফলে তিলে তিলে মৃত্যু হয়েছে বছর ২৬ এর এই গৃহবধু তুলুসী টুডুর। এই অভিযোগে আজ ২৬ জুলাই সকালে ঐ ওঝাকে গাছে বেঁধে বিক্ষোভ দেখায় গ্রামবাসীরা। ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের গতকাল ২৫ জুলাই শান্তিনিকেতন থানার বোলপুর পুরসভার ১ নং ওয়ার্ড বনডাঙ্গা এলাকার আদিবাসী পাড়ায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ ২৬ জুলাই সকালে গ্রামে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ওই গৃহবধুর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরেই গ্রামবাসীরা অভিযুক্ত ওঝাকে গাছে বেঁধে রেখে বিক্ষোভ দেখায়। এই ঘটনার খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায় শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ। দীর্ঘক্ষণ পর গ্রামের উত্তেজিত জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে ঐ তান্ত্রিক লক্ষ্মণ সোরেনকে নিয়ে যায় থানায়। গ্রামবাসীরা জানান,বনডাঙ্গা এলাকায় ওই তান্ত্রিক দীর্ঘদিন ধরেই নিজের ব্যবসা ফেঁদে বসেছিলেন। জরিবুটি, কবজ, তাবিজ, ঝাড়ফুঁক করে গ্রামের বাসিন্দাদের রোগ সারিয়ে দিতেন বলে এলাকার মানুষের মনে বিশ্বাস এনেছিলেন। উল্লেখ্য, বেশ কিছুদিন ধরে বনডাঙ্গা গ্রামের তুলসী টুডু অসুস্থ ছিলেন। বর্ধমান, বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু হাসপাতালের চিকিৎসকদের দেওয়া ওষুধ খেতে দেয়নি ওই তান্ত্রিক। এমনই অভিযোগ জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। তান্ত্রিক নিজের জরিবুটি ওষুধ দেওয়ার বদলে প্রচুর টাকা,জায়গা, জমি এমনকি সোনার গহনা দাবি করতেন বলে মৃতার স্বামী সোম টুড জানান। দিতে না পারলে বিভিন্নভাবে হেনস্থা করা হতো। ওষুধ না খেয়ে জরিবুটি খাওয়ার কারণে বৃহস্পতিবার হঠাৎ করেই মৃত্যু হয় তুলসী টুডুর। এই মৃত্যুতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসীরা। গ্রামবাসী ও পরিবারের সদস্যদের দাবি ঝাড়ফুঁক করেই তুলসী টুডুকে মেরে ফেলেছে ওই তান্ত্রিক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *