শম্ভুনাথ সেনঃ
চলে গেলেন সিপিআইএমের বীরভূমের এক প্রবীণ নেতা তথা গণতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের বীরভূম জেলার প্রথম সম্পাদক ব্রজমোহন মুখোপাধ্যায়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন। ৩ আগস্ট দুপুর ২:৫৫ মিনিটে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর মৃত্যু সংবাদ জেলায় এসে পৌঁছাতেই রাজনৈতিক মহলে নামে শোকের ছায়া।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ২০ বছর তিনি বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি পদে আসীন ছিলেন। পরবর্তীতে ২ বার সিউড়ি বিধানসভার বিধায়ক হন। উল্লেখ্য, ছাত্র জীবন থেকেই তিনি ছিলেন বামপন্থী মতাদর্শে বিশ্বাসী। গণতান্ত্রিক যুব ফেডারেশনের প্রথম জেলা সম্পাদক নির্বাচিত হন। ছ’য়ের দশকে তিনি প্রথম সিপিএমের সদস্য হন। কলেজ জীবনের পর শিক্ষকতাকে তিনি পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন । পরবর্তীতে তিনি হয়ে যান তাঁর রাজনৈতিক দলের সর্বক্ষণের কর্মী। রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকার গঠিত হওয়ার পরেই ১৯৭৮ সালে তিনিই প্রথম বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি নির্বাচিত হন। একটানা দীর্ঘ ২০ বছর তিনি সভাধিপতি পদেই আসীন ছিলেন।
পরবর্তীতে সিপিআইএমের প্রতীকে দু’বার সিউড়ি বিধানসভার বিধায়ক নির্বাচিত হন। উল্লেখ্য, তাঁর শাসনকালে বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে ওঠে। স্থাপিত হয় মল্লারপুর টুরকু হাঁসদা-লেপাচা হেমব্রম মহাবিদ্যালয়, বীরভূম ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি কলেজ এমন জেলার বহু উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড। বীরভূমের শ্রমজীবী মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার লড়াইয়ে বীরভূমে তখন একটি নাম ব্রজ মুখোপাধ্যায়। রাজনীতিতে তিনি নিজেকে উজাড় করে দিয়েছিলেন। নেতা হিসেবে শ্রমজীবী মানুষের কাছে তিনি পেয়েছিলেন গভীর ভালোবাসা। জেলার প্রশাসনিক দায়িত্বের পাশাপাশি তিনি একজন সুবক্তা হিসেবে জেলার মানুষের কাছে চিহ্নিত হয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন পলিটব্যুরোর সদস্য তথা প্রাক্তন সাংসদ রামচন্দ্র ডোম, সিপিআইএমের বীরভূম জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ সহ দলীয় নেতা কর্মীরা। ৪ আগষ্ট রবিবার বীরভূমে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।