শম্ভুনাথ সেনঃ
আরজি কর-কাণ্ডের নারকীয় ঘটনায় যখন রাজ্যজুড়ে উত্তাল অবস্থা, ঠিক তেমন সময়ে বিশ্বভারতীতে ভিন রাজ্যের এক আবাসিক ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যুতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে৷ জানা গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আম্রপালি ছাত্রী নিবাসে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই ছাত্রী ৷ পরে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়৷ বিশ্বভারতীর শিল্প সদনের তৃতীয় বর্ষের এই ছাত্রীর নাম অনামিকা সিং৷ বাড়ি উত্তরপ্রদেশের বারাণসী৷ বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ সূত্রে খবর, গতকাল ৫ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার বিকেলে তার নিজের রুমে ছাত্রীটি বিষ খান৷ অসুস্থ অবস্থায় সহপাঠীরা তাকে প্রথমেই বিশ্বভারতীর পিয়ারসন মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করে৷ পরে অবস্থার অবনতি হলে সিয়ানে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়৷ সেখানে তাঁর মৃত্যু হয় ৷ খবর পেয়ে হাসপাতালে যান পুলিশ ও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ৷ রাতেই শান্তিনিকেতন থানার ওসি কস্তুরি মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী আসে বিশ্বভারতীর আম্রপালি ছাত্রী নিবাসে৷ সহপাঠীদের অভিযোগ, বিশ্বভারতীর কোনো আধিকারিক ছাড়াই ছাত্রী নিবাসে প্রবেশ করে পুলিশ৷ এই ঘটনায় ওসি-সহ পুলিশকর্মীদের ছাত্রী নিবাসে আটকে রেখে বিক্ষাভ দেখাতে শুরু করেন পড়ুয়ারা৷
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান অতিরিক্ত বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার (বোলপুর) রাণা মুখোপাধ্যায় এবং বোলপুরের এসডিপিও রিকি আগরওয়াল৷ পৌঁছে যান বিশ্বভারতী ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অশোক মাহাতো, নিরাপত্তা আধিকারিক সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায় সহ অন্যান্যরা। তাঁদেরকে ঘিরেও বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়ারা৷ ছাত্রী নিবাসের মূল গেটে কেন সিসিটিভি ক্যামেরা নেই, এমন প্রশ্ন তোলেন তারা! এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠে বিশ্বভারতী৷ পরে পুলিশী তৎপরতায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়৷ বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অশোক মাহাতো বলেন, “একটা দুঃখজনক ঘটনা ঘটে গিয়েছে। মৃত ছাত্রীর পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
কেউ কি ব্ল্যাকমেল করেছিল ওই ছাত্রীকে? সে কারণেই সে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে! এমন চাঞ্চল্যকর দাবি তুলেছে মৃত ছাত্রীর মা। বীরভূম জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বোলপুর) রাণা মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বোর্ড বসিয়ে কোনও মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে মৃতদেহটির ময়নাতদন্ত করা হবে ৷ তথ্যপ্রমাণ লোপাটের ভয়ে পুলিশ হস্টেলের ঘরটি তড়িঘড়ি সিল করেছে ৷ প্রয়োজনে ফরেন্সিক দল ডাকা হবে বলেও পুলিশের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়৷