
উত্তম মণ্ডলঃ
আগামী ২ মে ত্রিপুরা এবং গোটা দেশের জন্য গর্বের দিন। ওই দিন ত্রিপুরা শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজের সভাপতি মলয় পীটকে ওয়ার্ল্ড বুক অব রেকর্ডস অ্যাওয়ার্ড আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তিনি ওই দিন কাজাখস্তানের আলমাটিতে অনুষ্ঠিতব্য ওয়ার্ল্ড বুক অব রেকর্ডস অ্যাওয়ার্ড সেরিমনিতে অংশগ্রহণ করবেন। ওয়ার্ল্ড বুক অব রেকর্ডস, লন্ডন কর্তৃক আয়োজিত এই আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানটি আলমাটির দোসমুখামেদভ স্ট্রিটে অবস্থিত ডাবলট্রি বাই হিলটন হোটেলে অনুষ্ঠিত হবে। এই পুরস্কার অনুষ্ঠান বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসাধারণ নিষ্ঠা, উদ্ভাবন এবং সমাজসেবায় অনন্য অবদান রাখা ব্যক্তিদের সম্মান জানানো হবে। গত ১৫ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে ওয়ার্ল্ড বুক অব রেকর্ডসের প্রেসিডেন্ট শ্রী সন্তোষ শুক্লা এক চিঠিতে (চিঠি নং ৯৮/২০২৫), চিকিৎসা শিক্ষাক্ষেত্রে, প্রতিষ্ঠান গঠনে এবং জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতি জানিয়ে মলয় পীটকে আমন্ত্রণ জানান।
নৈসর্গিক সৌন্দর্য, সমৃদ্ধ ঐতিহ্য এবং বহুজাতিক সংস্কৃতির জন্য পরিচিত আলমাটি এই ধরনের মর্যাদাপূর্ণ অনুষ্ঠানের একটি প্রতীকী ও গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবে বিবেচিত হয়। এই শহরটি বিভিন্ন সংস্কৃতি ও ভাবনার মিলনস্থল, যা বিশ্বের সেরা উৎকর্ষ ও ঐক্যের চেতনা উদযাপনের জন্য এক উপযুক্ত পটভূমি।
ওয়ার্ল্ড বুক অব রেকর্ডস অ্যাওয়ার্ড সেরিমনি শুধুমাত্র একটি পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান নয়, এটি মানবতার সহনশীলতা, সৃজনশীলতা এবং অগ্রগতির প্রতি অঙ্গীকারের এক উৎসব। এতে রেকর্ডধারী, উদ্ভাবক, শিক্ষক, বিজ্ঞানী, উদ্যোক্তা ও সমাজনেতাদের সমাগম ঘটবে – যারা প্রত্যেকে তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে বাস্তবিক প্রভাব ফেলেছেন।
মলয় পীটের দূরদর্শী নেতৃত্বে, ত্রিপুরা শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজ খুব তাড়াতাড়ি একটি শীর্ষস্থানীয় স্বাস্থ্য-শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে, যা চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিষেবায় উৎকর্ষতা আনতে বদ্ধপরিকর। যেমনটা আমরা জানি, আগরতলার কাছেই রানীর খামারে অবস্থিত ত্রিপুরা শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজ ২০২৪ সালে প্রতিষ্ঠার কয়েক মাসের মধ্যেই এক ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। স্বাধিন ট্রাস্ট কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত এবং ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত এই কলেজটি ১৫০ জন ছাত্র নিয়ে এমবিবিএস কোর্স শুরু করে। এর প্রথম বছরেই ২১টি ভারতীয় রাজ্য থেকে ছাত্র ভর্তি করিয়ে, এটি ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডস এবং এশিয়া বুক অব রেকর্ডস-এ নাম তুলে অনন্য কীর্তি অর্জন করে — যা নতুন মেডিকেল কলেজগুলোর জন্য এক বিরল দৃষ্টান্ত।
এই আমন্ত্রণে কলেজের শিক্ষক, ছাত্র এবং বৃহত্তর সমাজে আনন্দ ও গর্বের রেশ ছড়িয়ে পরেছে। এটি শুধু মলয় পীটকে নয়, ত্রিপুরাকেও বিশ্ব শিক্ষাক্ষেত্র ও সামাজিক নেতৃত্বের মানচিত্রে স্থান দিতে চলেছে। সেই সঙ্গে এটি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ও অবদানের প্রতিফলন। যখন পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের দিন ঘনিয়ে আসছে, তখন উত্তেজনা ও প্রত্যাশা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। পুরো দেশ গর্বের সঙ্গে প্রত্যক্ষ করবে, যখন তার একজন কৃতী সন্তান এই আন্তর্জাতিক মঞ্চে সম্মান গ্রহণ করবেন।
