ভারত বনাম পাকিস্তান: সামরিক শক্তির তুলনামূলক বিশ্লেষণ

নয়াপ্রজন্ম প্রতিবেদনঃ

বিশ্ব রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ দুটি শক্তি ভারত ও পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরেই সামরিক ক্ষেত্রে একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী। বিশেষ করে ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে একাধিক যুদ্ধ এবং সীমান্ত উত্তেজনা দেখা গেছে। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে, এই দুই দেশের সামরিক শক্তির তুলনামূলক চিত্র কী রকম, তা বিশ্লেষণ করা জরুরি।
সেনাবাহিনী ও জনবল:
ভারতীয় সেনাবাহিনী বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবাহিনী। ভারতের সক্রিয় সেনাসদস্য সংখ্যা আনুমানিক ১৪ লক্ষ, যেখানে পাকিস্তানের সক্রিয় সৈন্য সংখ্যা প্রায় ৬ লক্ষ। রিজার্ভ ফোর্স এবং আধাসামরিক বাহিনী যোগ করলে ভারতের মোট সামরিক শক্তি পাকিস্তানের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।
বিমান ও নৌবাহিনী:
ভারতের বিমানবাহিনী (IAF) প্রযুক্তি ও সংখ্যার দিক থেকে পাকিস্তানের বিমানবাহিনীর (PAF) তুলনায় এগিয়ে। ভারতের হাতে রয়েছে প্রায় ২,২০০ সামরিক বিমান, যেখানে পাকিস্তানের রয়েছে প্রায় ৯০০টির মতো। নৌবাহিনীর ক্ষেত্রেও ভারত অনেক বড় – aircraft carrier, nuclear submarine এবং destroyer-এর মতো উন্নত সরঞ্জামে ভারতের আধিপত্য স্পষ্ট।
পারমাণবিক শক্তি:
উভয় দেশই পারমাণবিক শক্তিধর। ভারতের কাছে আনুমানিক ১৬০টির মতো পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে এবং পাকিস্তানের কাছে আছে প্রায় ১৭০টির মতো। তবে, ব্যবহারের নীতিতে পার্থক্য রয়েছে। ভারত “No First Use” (প্রথমে ব্যবহার নয়) নীতি গ্রহণ করেছে, যেখানে পাকিস্তান এমন কোনও স্পষ্ট ঘোষণা করেনি।
বাজেট ও প্রযুক্তি উন্নয়ন:
ভারতের বার্ষিক প্রতিরক্ষা বাজেট প্রায় ৮৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (২০২৪ সালের হিসাব অনুযায়ী), যেখানে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বাজেট প্রায় ১১ বিলিয়ন ডলার। প্রযুক্তির দিক থেকেও ভারত বেশ এগিয়ে রয়েছে; দেশীয় উৎপাদন এবং বিদেশী প্রযুক্তি-সহযোগিতার মাধ্যমে ভারত তার প্রতিরক্ষা খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে। পাকিস্তান প্রধানত চীন এবং কিছু মধ্যপ্রাচ্যের দেশের উপর নির্ভরশীল।
আধুনিকীকরণ এবং নতুন উদ্যোগ:
ভারত সামরিক শক্তির আধুনিকীকরণের জন্য ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশীয় প্রতিরক্ষা উৎপাদন বাড়াচ্ছে। পাকিস্তানও তার অস্ত্রভাণ্ডার আধুনিকীকরণের চেষ্টা করছে, বিশেষ করে চীনের সহযোগিতায়।
যদিও সামগ্রিক সামরিক শক্তির দিক থেকে ভারত অনেক এগিয়ে। উভয় দেশের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার এবং সীমান্ত উত্তেজনা বিশ্ব রাজনীতির জন্য চিরকালই উদ্বেগের বিষয় হয়ে থেকেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *