
সনাতন সৌঃ
৯ নভেম্বর সকালে হেতমপুরের রাজ পরিবারের শেষ রাণীমা পূর্ণিমা চক্রবর্তী মায়া ত্যাগ করে নীরবে নিভৃতে চলে গেলেন । তাঁর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। তিনি এলাকায় রাণীমা নামে পরিচিত ছিলেন।তাঁর শবদেহ হেতমপুর থেকে কলকাতা কালিঘাটে মহাশ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী সেখানেই তাঁর শবদেহ সৎকার করা হবে। যেহেতু তাঁর স্বামীর শবদেহ কালিঘাটের মহাশ্মশানে সৎকার করা হয়েছিল।পরিবার সূত্রে জানা যায় যে, তিনি বার্ধক্য জনিত কারণে দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। তিনি হেতমপুরের শেষ রাজা প্রয়াত মাধবীরঞ্জন চক্রবর্তীর সহধর্মিনী ছিলেন। এলাকার বিভিন্ন জনকল্যাণ মূলক কর্মকাণ্ডে তিনি যুক্ত ছিলেন।তাঁদের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী রাজবাড়ীর সহযোগিতায় সেই গৌরবময় শিক্ষা ,সাহিত্য ও সংস্কৃতির জগতে আজও জনমানসে দারুন সমৃদ্ধ লাভ করেছে। তাঁদের প্রতিষ্ঠিত গড়ে উঠেছে প্রাচীন হেতমপুর কৃষ্ণচন্দ্র কলেজ, হাইস্কুল,গার্লাস স্কুল, নিরাময় টি বি হাসপাতাল, সরস্বতী পূজার মেলা, সাহিত্য সভা ইত্যাদি জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান। তাঁদের অবদান ছিল অনস্বীকার্য।
তাঁর প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এলাকার বিশিষ্ট সাহিত্যিক রীনা কবিরাজ। তিনি বলেন যে, তাঁর কন্যা বৈশাখী চক্রবর্তীর সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় হয় হেতমপুর সরস্বতী পূজোর সময় সাহিত্য সভায়। তখন থেকেই তাঁদের সঙ্গে আমার পারিবারিক হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সূত্রেই আমি তাঁদের বাড়িতে নিয়মিত যেতাম। নানান বিষয়ে আলোচনা হতো।খুব ভালো মনের মানুষ ছিলেন তিনি। তাঁর অমায়িক ব্যবহারে আমি খুব মুগ্ধ হয়েছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় তাঁর অন্তিম কালে হেতমপুরের বিশ্বজিৎ বাবু ছাড়া অন্য কেউ তেমন সহযোগিতা করে নাই বলে তিনি আক্ষেপ করেন। তাঁরা হেতমপুরে জীর্ণ রাজ বাড়িতেই বসবাস করতেন। কখনো কখনো কলকাতায় রাজ বাড়িতে যেতেন। আমি এক হিতাকাঙ্খী জনদরদী প্রিয়জনকে হারালাম।তাঁর মৃত্যুতে শিক্ষা,সাহিত্য সংস্কৃতি ও সেবার জগতে এক অপূরণীয় ক্ষতি হলো।

