সেখ রিয়াজউদ্দিনঃ
রাত পোহালেই মঙ্গলবার পড়ছে আরবি সন অনুযায়ী বছরের প্রথম মাস মহরমের ১০ তারিখ। এই তারিখে ইরাকের কারবালা প্রান্তরে, ন্যায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এবং অন্যায়ের প্রতিবাদে যে যুদ্ধ, সেই যুদ্ধে শাহাদাত বরণ করেন সৈয়দ ইমাম হোসেন ও তার সঙ্গী সাথীরা। সেই বিষাদময় ঘটনার স্মরণে বিশ্ব মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষজন প্রতি বছর ১০ ই মহরম শোক উৎসব পালন করে থাকেন। এই মহরম মাসের ১০ তারিখে এজিদের সৈন্যদের হাতে শাহাদাত বরণ করেন সৈয়দ ইমাম হোসেন সহ তার সঙ্গী সাথীরা। মহরম উপলক্ষে তাজিয়া, মার্শিয়া সহযোগে শোভাযাত্রা, লাঠিখেলা সহ অন্যান্য খেলা, মাতমজারি সহ বিভিন্ন স্থানে বিভিন্নভাবে পালিত হয় মহরম। ব্যতিক্রমী হিসেবে বীরভূমের খয়রাসোল ব্লকের লোকপুর থানার বুধপুর নিউ আজাদ ক্লাবের সদস্যগণ এগিয়ে আসে এক অভিনব ভাবনা নিয়ে। রক্তপাত বা রক্ত ঝরিয়ে নয়, রক্তদান করে মনুষ্য জীবন বাঁচানোর এক প্রয়াসে। সেই উপলক্ষে সোমবার ৮ অগাষ্ট ক্লাব প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবির। এদিন মোট ৫২ জন রক্ত দাতা স্বেচ্ছায় রক্তদান করেন। ফিতে কেটে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন লোকপুর থানার ওসি সন্তোষ ভকত এবং বিশিষ্ট সমাজসেবী কাঞ্চন অধিকারী। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী সুনীল কুমার সাহা, সমাজসেবী সেখ জয়নাল, ক্লাব সম্পাদক সেখ মিলন সহ বহু বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ এবং ক্লাব সদস্যবৃন্দ। এক মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রক্তদানের গুরুত্ব তথা প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে উপস্থিত অতিথিগণ সকলেই আলোকপাত করেন। স্থানীয় মসজিদের পেশ ইমাম মৌলানা নাজমুদ্দিন নিজে রক্তদান করলেন এবং এক প্রতিক্রিয়ায় জানালেন শহীদে কারবালার ঘটনা এবং আজকের বর্তমান পরিস্থিতিতে রক্তদানের প্রয়োজনীয়তা। অন্যদিকে ক্লাব সম্পাদক সেখ মিলন বলেন যে মাহে মহরম উপলক্ষে ক্লাবের পক্ষ থেকে এক চিন্তা ভাবনা নেওয়া হয় যে রক্ত ঝরিয়ে না, রক্ত দান করে মহরম উৎসব পালন করার। রক্তের যে গুরুত্ব বা চাহিদা সেটা দেখা গেছে করোনা পরিস্থিতিকালে, থ্যালাসেমিয়া বা মুমুর্স রোগীদের কথা মাথায় রেখে ক্লাবের এই উদ্যোগ। ক্লাব সদস্য সেখ সাবিউল, সেখ জিয়ারু, সেখ কাহারুল, সেখ মোসাব, সেখ সারফুল এরকম বহু যুবক আজকের শিবিরে রক্তদান করে আনন্দিত এবং সকলেই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করে প্রতি বছর অন্তত একটি রক্তদান শিবির করবেই।