সেখ রিয়াজউদ্দিনঃ
বর্তমান যুগে বিভিন্ন স্থানে স্কুল খুলে আত্মরক্ষার জন্য নিয়মিত ক্লাস বা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে যা ক্যারাটে স্কুল নামে সর্বাধিক পরিচিত। যুগোপযোগী তথা পথে ঘাটে বেরোনোর পথে আত্মরক্ষার জন্য এ এক লড়াইয়ের কৌশল। বর্তমানে ক্যারাটে শিক্ষার চাহিদা দৈনন্দিন বেড়েই চলেছে ছেলে মেয়েদের মধ্যে এমনকি শহর ছেড়ে গ্রামীণ এলাকায়ও এর চাহিদা ব্যাপক। সেইরূপ “মিশন অনন্যা” নামক এক সংস্থার মাধ্যমে এতদিন স্কুল, কলেজের ছাত্রীদের বিনামূল্যে আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ছিল, এবার পৃথকভাবে ছেলেদের জন্যও শুরু হয়েছে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ। বীরভূম জেলার পুলিশকর্মী কৌশভ সান্যাল তাঁর অবসর সময়কে কাজে লাগিয়ে ইতিমধ্যেই বীরভূম, হুগলি ও বর্ধমান এই তিন জেলার প্রায় ষাটহাজার ছাত্রীকে বিনামূল্যে আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। তবে এবার থেকে স্কুল কলেজের ছাত্রদেরও তাঁর মিশনের অন্তর্ভুক্ত করে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু করলেন। বোলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের এনসিসি ক্লাসের শতাধিক ছাত্রকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এই নতুন মিশনের শুভ সূচনা তথা পথ চলা শুরু করলেন। এদিন স্থানীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের নিয়ে আত্মরক্ষা প্রশিক্ষণের শুভ সূচনায় উপস্থিত ছিলেন বোলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকমন্ডলী এবং ভারতীয় সেনার এক আধিকারিক। শিবিরে যে বিষয়ের উপর বিশেষ আলোচনা উঠে আসে যেমন হঠাৎ বিপদের সম্মুখীন হলে কিভাবে নিজেকে তৎক্ষনাৎ রক্ষা করা যেতে পারে। তার ওপর এক ঘন্টার সেল্ফ ডিফেন্স ক্লাস নেন ক্যারাটে প্রশিক্ষক কৌশভ সান্যাল। সেই সাথে উপস্থিত ছিলেন ক্যারাটে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত তাঁর তিন সিনিয়র ছাত্রী পারমিতা দত্তরায়, প্রিয়াঙ্কা মূর্মূ ও সুমিতা মান্ডী। উল্লেখ্য উক্ত তিন ছাত্রী আগামী সেপ্টেম্বরে জাতীয় স্তরের ক্যারাটে প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করার কথা, মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ইন্দোরে। বিশেষ উল্লেখযোগ্য যে, চলতি বছরেই নেপালে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক স্তরে ক্যারাটে প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহন করে পারমিতা স্বর্ণপদক এবং প্রিয়াংকা রুপোর পদক জিতেছে। তবে এই জয়ে তাঁরা সন্তুষ্ট নন কারণ পারমিতা ও প্রিয়াঙ্কা আরো বড় লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলেছে তাঁদের ক্যারাটে প্রশিক্ষকের হাত ধরে। কৌশভ বাবু বলেন, এরা প্রত্যেকেই আমার কাছে ক্যারাটে শিখছে। কারো কাছ থেকেই আমি টাকা নিই না। ক্যারাটে এই মুহূর্তে বেশীরভাগ প্রশিক্ষকের কাছেই ব্যবসার অঙ্গ। আমি ক্যারাটেকে ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখছি না। আমি চাই গ্রাম, শহর, পাড়া থেকে যোগ্য ছেলেমেয়েরা উঠে আসুক। অনেক প্রতিভা আছে গ্রাম্য এলাকায়। তাদের তৈরি করতে পারলে এরাই একদিন আমাদের দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে। টাকা নয় খেলাধূলার জগতে একজন প্রশিক্ষকের পরিচয় হওয়া উচিত তাঁর দক্ষতা। বোলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রদের এই প্রশিক্ষণ আগামী দিনে তাদের অনেক কাজে লাগবে বলে জানিয়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুপ্রিয় সাধু। তিনি বলেন, এই ধরনের কাজের আরো প্রসার ঘটানো দরকার যাতে ছেলেমেয়েরা খেলাধুলার প্রতি উৎসাহিত হয়।