সেখ ওলি মহম্মদঃ
দীর্ঘদিন ধরে দুই গ্ৰামের রাস্তা একেবারে বেহাল অবস্থায় রয়েছে। অথচ ফলক বলছে কংক্রীটের রাস্তা তৈরীর কাজ শুরু হয়েছে ২০২১ সালের মার্চ মাসের ২০ তারিখ। বীরভূম জেলার খয়রাশোল ব্লকের রূপুষপুর পঞ্চায়েতের নিচিন্তা ও ডেকুরাপাড়া গ্ৰামের প্রায় এক কিলোমিটারের বেশি রাস্তা একেবারে বেহাল। টোটো, অটো, বড় গাড়ি তো দূরের কথা গ্ৰামের ভেতরে প্রসূতি নিয়ে যাওয়ার জন্য মাতৃযানও ঢুকতে চায় না। গ্ৰামেরই লক্ষ্মীরানী সূত্রধর নামে এক আশাকর্মী জানিয়েছেন, দিন দশেক আগে এক প্রসূতিকে হাসপাতালে ভর্তি করার জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্স ডাকা হয়েছিল কিন্তু অ্যাম্বুলেন্সটি গ্ৰামের শেষ প্রান্তে এসে আর ঢুকতে চায়নি, রাস্তা খারাপের জন্য। শেষ পর্যন্ত প্রসূতিকে গ্ৰামের মানুষের সাহায্যে গ্ৰামের শেষ প্রান্তে নিয়ে গিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে চাপানো হয়। গ্ৰামবাসীরা জানিয়েছেন, দিনের পর দিন, বছরের পর বছর এমনই অবস্থা এই দুই গ্ৰামের রাস্তার। হেলদোল নেই কারোর। নিচিন্তা গ্ৰামের পাপাই মণ্ডল নামে এক যুবক জানিয়েছেন, গ্ৰামের পঞ্চায়েত সদস্য থেকে শুরু করে পঞ্চায়েতের প্রধান, সভাপতি এমনকি ব্লক আধিকারিককেও জানানো হয়েছে। দেওয়া হয়েছে স্মারকলিপি, অথচ কোনো কাজ হয়নি। মিলেছে শুধু প্রতিশ্রুতি। প্রত্যেকেই কেবল আশ্বাস দিয়েছেন, কিন্তু রাস্তা যে কে সেই। অথচ রাস্তার পাশেই ঘটা করে ফলক বসানো হয়েছে। যাতে কাজ শুরু হওয়ার তারিখ থেকে কত টাকা বরাদ্দ সব কিছুই উল্লেখ করা রয়েছে। কেবল শুরু হয়নি রাস্তার কাজ আর আদৌও হবে কি না, সেই দুশ্চিন্তায় গ্ৰামবাসীরা। রুপুসপুর পঞ্চায়েত প্রধান চন্দনা বাগদীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে জানা যায়, তিনি নিয়মিত পঞ্চায়েত অফিসেই আসেন না। যদিও খয়রাশোল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তপন কুমার সাহা বলেন, গ্রামের মানুষ আমার কাছে এসেছিলো, তাদের অভিযোগ সত্যি, আমি এবং BDO সাহেব বিষয়টি গ্রামে গিয়ে দেখবো। তবে ফলকে কি লেখা আছে, আর কাজ কেন হয়নি সেটা না দেখে বলতে পারবো না। তাছাড়া আমি নতুন এসেছি; এই বলে তিনি ছেড়ে দেন। অন্য দিকে খয়রাশোলের BDO তিনি ক্যামেরার সামনে কিছু না বললেও তবে তিনি জানান, এটি M.G.N.R.E.G.A ১০০ দিনের কাজের মধ্যে পড়ে, আর ১০০ দিনের কাজ এখন বন্ধ আছে। আবার ১০০ দিনের কাজ শুরু হলে ঐ রাস্তাও হবে এই বলে এড়িয়ে গেছেন। যদিও তথ্য বলছে ১০০ দিনের কাজ বন্ধ আছে ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে অথচ ফলকে লেখা রাস্তার কাজ শুরু হয়েছে ২০.৩.২০২১। এখন দেখার রাস্তা হবে তো? তাই এই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন গ্ৰামবাসীরা।