সেখ রিয়াজুদ্দিনঃ
দীর্ঘদিন পর রাজ্যে ১১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় টেট পরীক্ষা। বীরভূম জেলায় মোট ৮৭ টি কেন্দ্রে প্রায় ৩৫ হাজার পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। জেলা সদর সিউড়ি, বোলপুর, রামপুরহাট সহ বিভিন্ন কেন্দ্রে দুএকটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া নির্বিঘ্নেই টেট পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। বোলপুরে একটি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের জন্য ব্যাগ পত্র রাখার নির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় সাময়িক উত্তেজনা ছড়ায়। বোলপুর থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেন। অপরদিকে সাঁইথিয়া এলাকার মাজিগ্রাম থেকে দুবরাজপুর ব্লকের হেতমপুর পরীক্ষা কেন্দ্রে যাবার পথে পরীক্ষার্থী শুভশ্রী দে সহ গাড়িতে থাকা তার স্বামী, শ্বাশুড়ী এবং আড়াই বছরের বাচ্চা ও ড্রাইভার পথ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।ঘটনাটি ঘটেছে রানীগঞ্জ মোরগ্রাম ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ওপর সদাইপুর থানার বাঁধেরশোল মোড়ের কাছে। স্থানীয় থানার পুলিশ তড়িঘড়ি এসে উদ্ধার করে এবং আহতদের সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করানো হয়। যদিও পরীক্ষার্থী শুভশ্রী দে জানান পথ দুর্ঘটনার পর মানসিক অবস্থা ভালো না থাকায় টেট পরীক্ষায় বসছি না। জেলা পুলিশের উদ্যোগে বিভিন্ন থানার পক্ষ থেকে পরীক্ষা কেন্দ্র গুলি ছাড়াও রাস্তার মোড়ে মোড়ে মোতায়েন করা হয়। যানজট রুখতে বড় গাড়ি গুলোকে ও সাময়িক বন্ধ করে রাখা হয়। তাছাড়া পরীক্ষার্থীদের সুবিধার্থে পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয় ছড়িয়ে ছিটিয়ে বিভিন্ন এলাকায়। বীরভূম জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান প্রলয় নায়েক এক সাংবাদিক সাক্ষাতকারে অভিযোগ করেন যে, সিউড়ি হাটজনবাজারে সকাল ১০.০১ থেকে ১০.২৫ মিনিট পর্যন্ত অযথা রেলগেট পড়েছিল। অথচ ঐ সময়ের মধ্যে কোন রেল যাতায়াত করেনি। এক্ষেত্রে উক্ত পথ দিয়ে সিউড়িতে আগত পরীক্ষার্থীদের কিছুটা সময় বিঘ্ন ঘটে। এছাড়া সমগ্র জেলা জুড়ে পুলিশ প্রশাসন, ব্লক, শিক্ষক অধ্যাপক সহ বিভিন্ন স্তরের সহযোগিতায় পরীক্ষা নির্বিঘ্নেই সম্পন্ন হয়েছে। এদিকে রামপুরহাট এলাকার মেয়ে পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল কোয়ার্টারে স্বামীর সাথে বসবাস করতেন। মাস ছয়েক কয়েক পূর্বে স্বামী শুভদীপ মাল আত্মহত্যা করে। স্ত্রী কাকলী মাল আত্মহত্যার জেরে তার শ্বশুর বাড়ির অভিযোগের ভিত্তিতে অন্য চারজনের সাথে তাকেও পুলিশ কেসে আসানসোল জেল হেফাজতে রয়েছে। টেট পরীক্ষা দেওয়ানোর জন্য পুলিশ আসানসোল জেল থেকে বীরভূমের মুরারই পরীক্ষা কেন্দ্রে আনে। কোলে তার দেড় বছরের শিশু সহ। পরীক্ষা মোটামুটি হয়েছে বলে সে জানিয়েছেন। অপরপ্রান্তে সিউড়ির জগন্নাথ মাহারা যার দুটি হাত নেই তবুও সে মনের জোরে পা দিয়ে লিখে টেট পরীক্ষায় অংশ নেয়।