উত্তম মণ্ডলঃ
গল্প মনে হলেও সত্যি। সুদূর পারস্য থেকে বীরভূমের তদানীন্তন রাজধানী রাজনগরে এসেছিলেন বিদগ্ধ সুফি সাধক সাইফুল হক্। তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে রাজকার্য ছেড়ে ঈশ্বর সাধনায় ব্রতী হলেন রাজনগরের পাঠান বংশীয় রাজা খাজা আসাদুল্লাহ খান (খৃ ১৬৯৭-খৃ ১৭১৮)। মাত্র ২১ বছর ১ মাস ২০ দিন রাজত্ব করার পর রাজনগর ফুলবাগানের ডাঙায় অহর্নিশ চললো তাঁর ব্যাগ্র ব্যাকুলতায় পুরোপুরি ঈশ্বর সাধনার কাজ। প্রতি বছর বাংলা ২৩ মাঘ রাজনগর ফুলবাগানের ডাঙায় তাঁর পবিত্র মাজারে অনুষ্ঠিত হয় ঊরুস উৎসব। এদিন সকালে রাজনগর রাজবাড়ি থেকে রাজপরিবারের সদস্যরা তাঁর ব্যবহৃত চাদর মাথায় করে পায়ে হেঁটে বয়ে নিয়ে এসে প্রথম চড়ান মাজারে। চলে ধর্মীয় প্রার্থনা। সেই সঙ্গে একদিনের এক গ্রামীণ মেলাও বসে এখানে। স্থানটি বতর্মানে ”দেওয়ান সাহেবের মাজার” নামে পরিচিত। হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ সব বিভেদ ভুলে আসেন রাজনগরের এই “সন্ন্যাসী রাজা” দেওয়ান সাহেবের পবিত্র মাজারে একটু শান্তির খোঁজে। আজ বাংলা ২৩ মাঘ আয়োজিত হলো সেই দেওয়ান সাহেবের মাজারে তাঁর ঊরূস উৎসব। সারাদিন ধরে চলে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান। হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ আসেন মাজারে। বাংলা-ঝাড়খণ্ডের বহু মানুষের আগমনে এদিন জমে ওঠে মাজার এলাকায় আয়োজিত একদিনের গ্রামীণ মেলাও। আজকের এই মেলায় হাজির ছিলেন রাজনগর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুকুমার সাধু, মহম্মদ শরীফসহ বিভিন্ন বিশিষ্টজনেরা।