সেখ রিয়াজুদ্দিনঃ
মশার উপদ্রব বাড়ছে, ডেঙ্গির প্রকোপ কমলেও সতর্কতা অবলম্বন করার বার্তা বীরভূম জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে। ফাইলেরিয়া বা গোদ মশাবাহিত একটি রোগ। যার ফলে হাত ফোলা, পা ফোলা, হাইড্রোসিল এই রোগের ফলেই হয়ে থাকে। ১০ ফেব্রুয়ারী বীরভূম জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের উদ্যোগে জেলা জুড়ে ফাইলেরিয়া দূরীকরণ কর্মসূচি শুরু হয় সর্বত্র একযোগে। গণ ঔষধ সেবনের পাশাপাশি উক্ত বিষয়ে জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের নিয়ে সচেতনতা শিবিরও অনুষ্ঠিত হয়। অনুরূপ দুবরাজপুর ব্লক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সমিতির সৌজন্যে তরুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে এমডিএস অর্থাৎ মাস ড্রাগ এডমিনিস্ট্রেশনের কর্মসূচির মাধ্যমে ফাইলেরিয়া দূরীকরণে ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করা হয়। এদিন ছাত্রছাত্রীদেরকে উপস্থিত আধিকারিকরা ফাইলেরিয়া মুক্ত করতে শপথবাক্য পাঠ করান। এদিন উপস্থিত ছিলেন দুবরাজপুর ব্লকের বিডিও রাজা আদক, দুবরাজপুর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সালমান মণ্ডল, দুবরাজপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মিলন বাগদী, দুবরাজপুর দক্ষিণ চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক সৌরিশ চ্যাটার্জি, দুবরাজপুর থানার এ.এস.আই বিপ্লব সিং, তরুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সোমনাথ মণ্ডল, বিদ্যালয় পরিচালন সমিতির সভাপতি সৈয়দ মাচিন হোসেন, বিশিষ্ট সমাজসেবী উজ্জ্বল ঘোষ, সেখ ফতেনুর সহ স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মী এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকাগণ। এদিন ফাইলেরিয়া মুক্ত সমাজ গড়তে এই রোগের প্রতিষেধক খেলেন বিডিও, বিএমওএইচ, অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। ফাইলেরিয়া তথা গোদ রোগ থেকে মুক্তি পেতে তরুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীকে প্রতিষেধক দেওয়া হয়। পাশাপাশি যাতে প্রত্যেকটি মানুষ গ্রহণ করে সেই আবেদন করেন দুবরাজপুর ব্লকের বিডিও রাজা আদক এবং দুবরাজপুর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সালমান মণ্ডল। ‘এমডিএ’ কর্মসূচির মাধ্যমে সকলে একই দিনে ওষুধ খেলে তবেই ওই এলাকা ফাইলেরিয়া রোগ ছড়ানো থেকে মুক্ত হবে। তবে দু’বছরের কমবয়সি শিশু, গর্ভবতী মহিলা, গুরুতর অসুস্থ, অত্যন্ত বৃদ্ধ শয্যাশায়ী ব্যক্তিরা এই কর্মসূচি থেকে বাদ থাকবেন। তবে, খালি পেটে এই ওষুধ খাওয়া যাবে না। অন্যদিকে রাজনগর ব্লক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের উদ্যোগে রাজনগর শম্ভু বংশী নিম্ন বুনিয়াদী বিদ্যালয়ে ফাইলেরিয়া দূরীকরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয় ফিতা কেটে। এখানে উপস্থিত ছিলেন রাজনগর ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক শুভদীপ পালিত ও রাজনগর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ডক্টর তীর্থঙ্কর সিনহা। ফাইলেরিয়া মুক্ত বীরভূম জেলা গড়ার লক্ষ্যে এম ডি এ প্রোগ্রামের অধীন প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্য কর্মীরা নিজের নিজের দায়িত্ব প্রাপ্ত বিভিন্ন গ্রামে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ওষুধ খাওয়াবেন বলে জানা যায়। বিদ্যালয়ের খুদে পড়ুয়াদের নিয়ে একটি সচেতনতামূলক শোভাযাত্রা আয়োজিত হয়। এদিন এলাকার বেশকিছু ফাইলেরিয়া রোগীকে কিট উপহার দেওয়া হয়। পাশাপাশি রাজনগরের বিডিও, বিএমএইচ, পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ, পঞ্চায়েত প্রধান সহ অন্যান্যরা ফাইলেরিয়ার ট্যাবলেট খেলেন উপস্থিত সকলের সামনে। এটা যে কোনো ক্ষতিকারক নয় সেই ভরসা জোগানোর লক্ষ্যেই মূলত গণ ঔষধ সেবন হিসেবে ছাত্র ছাত্রী সহ সকলের কাছে খেয়ে দেখান এবং অন্যদেরকে খাওয়ার জন্য আবেদন করেন। এরূপ খয়রাসোল, সিউড়ী, ইলামবাজার সহ জেলার বিভিন্ন ব্লকের খবর পাওয়া গেছে।