বিজয়কুমার দাসঃ
সাঁইথিয়া শহরে ঝাঁ চকচকে বাস স্ট্যান্ড আছে সিউড়ি থেকে সাঁইথিয়া প্রবেশের মুখেই। সাঁইথিয়া স্টেশন রোড কানা করে দিয়ে যানজট কমাতে গড়ে উঠেছে নতুন বাসস্ট্যান্ড। বেশ প্রশস্ত এই জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকতে পারে অনেক বাস। কিন্তু এখন সেখানে সিউড়িমুখী হাতে গোণা কয়েকটি বাস দাঁড়িয়ে থাকে। তাদের সামনে দিয়েই যাত্রী চাপিয়ে বীর বিক্রমে চলে যায় অটো আর টোটো।গুটিকয় যাত্রী নিয়ে বাস ছাড়ে নতুন বাস স্ট্য্যান্ড থেকে। বেশ কিছু বাস অটো টোটোর দাপটেই তুলে নেওয়া হয়েছে। দীর্ঘ কয়েক মাস থেকে নতুন ব্রিজ দিয়ে বাস যাওয়া বন্ধ। বন্ধের নোটিশ ঝোলানো হয়েছিল মেরামতির বার্তা দিয়ে। এখন শোনা যাচ্ছে, জাতীয় সড়কের সঙ্গে যুক্ত হবে নতুন ব্রিজ। তাই বাস চলাচল কতদিন বন্ধ থাকবে তা বলা যাবে না। এর ফলেই আমোদপুর, লাভপুর, বোলপুর, রামপুরহাট, ময়ূরেশ্বর, বহরমপুর, মহম্মদবাজার ও মহম্মদবাজার হয়ে সিউড়িগামী বাস দাঁড়ায় খোলা আকাশের নিচে জলশূন্য ময়ূরাক্ষী নদীর বালুচরে। বাসযাত্রীদের ময়ূরাক্ষীর বুক বেঁধে গড়ে তোলা ভাঙাচোরা কজওয়ে দিয়ে গিয়ে বাসে চাপতে হয়। এখানে যাত্রীদের দাঁড়ানোর কোন ছাউনি নেই। সন্ধ্যের পর পর্যাপ্ত আলো নেই। দু একটা অস্থায়ী চা বিস্কুটের দোকান গড়ে উঠেছে নদীর বুকেই। যদি হুস করে মাসাঞ্জোর জল ছেড়ে দেয় তাহলে তো সব বাসের জলাঞ্জলি। যদিও এক সময়ের উত্তাল ময়ূরাক্ষী এখন কাশবন, জলহীন মরুভূমি। পড়ে থাকে মরা সাপের মত নির্বিষ হয়ে। তার ওপর বুকে কজওয়ে নামক দুটি ব্যান্ডেজ। নদীর পার ব্জুড়ে চাষবাস হচ্ছে। কিন্তু এই তো বন্যার সময়। যদি বর্ষণ প্রবল আকার নেয়, যদি পুজোর আগে বন্যার সম্ভাবনা (অতীতে তাই হয়েছে) প্রবল হয়, তাহলে বাস দাঁড়াবে কোথায়! এর ওপর কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, অবিলম্বেই মেরামতির জন্য ভাঙা হবে পুরনো অথর্ব অক্ষম রেলব্রিজ। তাহলে তো সোনায় সোহাগা। এপার ওপার করাই যাবে না। বাস, তুমি দাঁড়াবে কোথায়?… তবু এখন নদীর ধার থেকেই অধিকাংশ বাস ছাড়ছে। তাই এক বাসচালক মজা করেই বললেন : আমাদের এখন নদীর ধারে “বাস” – ভাবনা বারো মাস।