উত্তম মণ্ডলঃ
শারীরিক ও পারিপার্শ্বিক সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে জীবনযুদ্ধে জয়ী হলেন রাজনগর ব্লকের পাতাডাঙ্গা গ্রামের সৌমী মুখার্জী। রাজনগরের পাতাডাঙ্গা গ্রামের পেশায় গৃহশিক্ষক কল্লোল মুখার্জি ও তাঁর স্ত্রী শুক্লা মুখার্জীর বাড়িতে যখন ছোট্ট ফুটফুটে সৌমীর জন্ম হয় তখন বাবা-মা উভয়েই আত্মহারা হয়ে স্বাভাবিকভাবেই ভেবেছিলেন আর দশটা ছেলে মেয়ের মতোই স্বাভাবিকভাবে আস্তে আস্তে বড় হয়ে উঠবে সৌমী। কিন্তু বছর পেরোতে না পেরেতেই তাঁরা বুঝতে পারেন সৌমি আর দশটা স্বাভাবিক ছেলে মেয়ের মতো নয়। একটু বড় হলেই বাবা-মা বুঝতে পারেন, সৌমী শারীরিক দিক দিয়ে প্রতিবন্ধী। কিন্তু তাঁরা হতাশ হননি, বরং নিজেরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে সিদ্ধান্ত নেন, যেভাবেই হোক তাঁদের একমাত্র মেয়েকে স্বনির্ভর করে তুলে সমাজে আর পাঁচ-দশটা স্বাভাবিক মানুষের মতোই মাথা তুলে দাঁড় করাবেন। করেছেনও তাই। ছোট্ট সৌমী পাতাডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পরে সিউড়ি মিউনিসিপিউলিটি ফ্রি প্রাইমারি স্কুল, এরপর সিউড়ি আর টি গার্লস স্কুল, এরপর তাঁতিপাড়া আই টি গার্লস স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিকের পর একটি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক প্রশিক্ষণ শেষ করে বাংলায় অনার্স পাশ করেন। বর্তমানে তিনি মাস্টার্স ডিগ্রি পাঠরতা। এরই মধ্যে তিনি সম্প্রতি রাজনগর বি এল আর ও অফিসে ডেটা এন্ট্রির কাজে যুক্ত হয়েছেন। শারীরিক প্রতীবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও নিজের লক্ষ্যে স্থির থাকলে যে সফল হওয়া যায়, তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ এই সৌমী মুখার্জি। তার এই সাফল্যের পিছনে তার বাবা-মা ছাড়াও আরেকজনের অবদান রয়েছে, যিনি হলেন সর্বশিক্ষা মিশনের রাজনগর চক্রের বিশেষ প্রশিক্ষিকা অপর্ণা দাস। তিনি সব সময় তার ছায়া সঙ্গী হিসেবে ছিলেন। সৌমীর কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন রাজনগরের বি এল আর ও বিদ্যুৎ কুমার নন্দী।