শম্ভুনাথ সেনঃ
প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠল বীরভূমের লাভপুরে। অভিযুক্ত দুই ব্যক্তির মধ্যে একজন খোদ লাভপুরের তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক মনিরুল ইসলাম, অন্যজন তার ঘনিষ্ঠ তৎকালীন প্রাক্তন প্রধান সুভাষ ব্যানার্জী। এই মর্মে এফ আই আর দায়ের হয় লাভপুর থানায়। অভিযোগ দায়ের করেছেন লাভপুরেরই বাসিন্দা সৌরদীপ সরকার নামে এক যুবক। এই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত লাভপুর বাবুপাড়ার বাসিন্দা সুভাষ ব্যানার্জীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। যদিও অভিযুক্ত সুভাষ ব্যানার্জী তার বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে। চক্রান্ত করে ফাঁসানো হয়েছে বলে তার পরিবারের দাবি। উল্লেখ্য, ২০১২ সালে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় সৌরদীপ সরকার লিখিত পরীক্ষা দিলেও উপযুক্ত বয়স না হওয়ার জন্য ইন্টারভিউ এ বাদ পড়ে। একথা জানিয়েছেন তিনি নিজেই। আর এখানেই উঠছে প্রশ্ন! তাহলে তিনি লিখিত পরীক্ষা দিলেন কিভাবে? তবে সৌরদীপ সরকার অভিযোগে জানিয়েছেন অভিযুক্ত সুভাষ ব্যানার্জী তার পিতৃবন্ধু। আর সেই সুযোগে তার বাবার কাছে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে প্রথম দফায় আড়াই লক্ষ ও পরে প্রাক্তন বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে গিয়ে আরও পাঁচ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। ইন্টারভিউ-এ বাদ পড়ার পর টাকা ফেরত চাইলেই তাকে হুমকি দেওয়া হয়। কিন্তু আজও টাকা ফেরত পাওয়া যায়নি। এমনকি ওই আঘাত সহ্য করতে না পেরে প্রয়াত হন সৌরদীপ সরকারের বাবা অরুণ সরকার। এ কথা জানিয়েছেন তিনি নিজেই। যদিও চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ ওঠার বিষয়টি লাভপুর এলাকায় প্রথম নয়। কিন্তু অভিযুক্তরা যেহেতু প্রাক্তন বিধায়ক ও প্রাক্তন প্রধান তাই এই ঘটনা কে কেন্দ্র করে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকায়। যদিও দুজনেই সেইসময় তৃণমূল রাজনৈতিক দলের হয়ে নির্বাচনে লড়ে বিধায়ক ও প্রধান হয়েছিলেন। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে ওদের সঙ্গে এখন দলের কোনো সম্পর্কই নেই। বিগত কয়েক বছর ধরেই শিক্ষক ও বিভিন্ন নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগে সমগ্র রাজ্য তোলপাড়, জেল খাটছেন একাধিক মন্ত্রী থেকে আধিকারিক। আর ঠিক সেখানে দাঁড়িয়ে খোদ প্রাক্তন বিধায়ক ও প্রাক্তন প্রধানের বিরুদ্ধে এহেন অভিযোগ রীতিমতো তাৎপর্যপূর্ণ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে লাভপুরে এখন রীতিমত চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।