নয়াপ্রজন্ম প্রতিবেদনঃ
সরকারি উদ্যোগে রাখী বন্ধন উৎসব রাজনগরে
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের যুব কল্যাণ ও ক্রীড়া দপ্তরের উদ্যোগে এবং রাজনগর ব্লক ও পঞ্চায়েত সমিতির পরিচালনায় রাখী বন্ধন উৎসব অনুষ্ঠিত হলো জেলা বীরভূমের প্রান্তিক অঞ্চল রাজনগরে। মূল অনুষ্ঠানটি হয় রাজনগর গ্রামীণ গ্রন্থাগার মুক্ত মঞ্চে। রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করার পর সেখানে এই উৎসবের তাৎপর্য তুলে ধরেন বিভিন্ন বক্তারা। এরপর চলে কচিকাঁচাদের পরিবেশিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পাশাপাশি পথচলতি মানুষের হাতে রাখী পরিয়ে দেওয়া হয়। হাজির ছিলেন রাজনগর বিডিও শুভাশীষ চক্রবর্তী, রাজনগর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুকুমার সাধু, রাণাপ্রতাপ রায়, মহম্মদ শরীফসহ এলাকার বিভিন্ন বিশিষ্টজনেদের পাশাপাশি ছাত্রছাত্রী থেকে সাধারণ মানুষ।
বীরভূমের দুবরাজপুর পুরসভার উদ্যোগে “রাখী বন্ধন” উৎসব ও “সংস্কৃতি দিবস” উদযাপন
সরকারের যুব কল্যাণ ও ক্রীড়া দপ্তরের উদ্যোগে বীরভূমের দুবরাজপুর পৌরসভার ব্যবস্থাপনায় সাড়ম্বরে পালিত হয় রাখি বন্ধন উৎসব। দিনটি “সংস্কৃতি দিবস” রূপে উদযাপিত হয়। উপস্থিত ছিলেন দুবরাজপুর পৌরসভার পৌরপ্রধান পীযূষ পাণ্ডে, বিশিষ্ট আইনজীবি স্বরূপ আচার্য, বিশিষ্ট শিক্ষক অরিন্দম চ্যাটার্জি, কাউন্সিলর বুলটি চক্রবর্তী, সনাতন পাল, অর্জুন চৌধুরী, সুভাষ মেটে প্রমুখ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবী তথা প্রাক্তন কাউন্সিলর প্রভাত চ্যাটার্জি, গুরুপদ দাস সহ পুরসভার প্রধান প্রধান করণিক সুভাষ রঞ্জন ধর এবং সমস্ত কর্মীবৃন্দ। এদিন মিষ্টি মুখের পাশাপাশি এদিন ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কে পথচলতি মানুষজন, টোটো ড্রাইভার, ট্যাক্সিচালকদের রাখি পরিয়ে দেওয়া হয়।
বীরভূমের ইলামবাজারে রাখী বন্ধন উপলক্ষে সংস্কৃতি দিবস উদযাপন অনুষ্ঠান
প্রতি বছরের মতো এবারও বীরভূমের ইলামবাজার ব্লকে যুব কল্যাণ দপ্তরের উদ্যোগে এবং পঞ্চায়েত সমিতির সহযোগিতায় সাড়ম্বরে উদযাপিত হলো “রাখি বন্ধন” উৎসব ও “সংস্কৃতি দিবস”। উপস্থিত ছিলেন বীরভূম জেলা পরিষদের মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ রবি মুর্মু, ইলামবাজার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুদীপ্ত সাহা হালদার, সহ-সভাপতি দুলাল চন্দ্র রায় সহ সাধারণ মানুষজন। উল্লেখ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাখি বন্ধন উৎসবকে কেন্দ্র করে ভাই ও বোনদের মধ্যে রাখি পরিয়ে দেওয়া হয়। মিষ্টিমুখ করানোর পাশাপাশি দেওয়া হয় সম্প্রীতির বার্তা। অনুষ্ঠানের শুরুতে মাঙ্গলিক প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলামের এর ছবিতে মাল্য দানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। রবীন্দ্রসঙ্গীতের সুরের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। সবশেষে দিনটি উদযাপনের তাৎপর্য তুলে ধরা হয়।
বীরভূমের সদাইপুরে মহিলা পুলিশ কর্মীরা পথ চলতি মানুষের হাতে পরিয়ে দিল রাখী
আজ রাখী পূর্ণিমা। সরকারি ভাবে সারা রাজ্য জুড়ে দিনটি উদযাপিত হচ্ছে। লক্ষ্য একটাই—“অটুট থাকুক ভাই-বোন এর সম্পর্কের বন্ধন”। আজ ১৯ শে আগষ্ট রাখী পূর্ণিমার পূণ্য লগ্নে বীরভূমের সদাইপুর থানার পক্ষ থেকে রাখি বন্ধন উৎসব অনুষ্ঠিত হল । এদিন সদাইপুরের জামবুনী বাসস্ট্যান্ডে ১৪ নং জাতীয় সড়কে পথযাত্রীদের হাতে রাখি পরিয়ে দেন থানার মহিলা পুলিশকর্মীরা। উপস্থিত ছিলেন সদাইপুর থানার ওসি মিকাইল মিয়া এবং সি আই (সদর) সুব্রত ইন্দ্র সহ অন্যান্য পুলিশ আধিকারিক ও পুলিশ কর্মীরা।
রাখীবন্ধনকে সামনে রেখে সংস্কৃতি দিবস পালন, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার
ঐতিহ্যবাহী রাখি বন্ধন উৎসব সোমবার, যা দেশজুড়ে মহাসমারোহে পালিত হয় । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের যুব কল্যাণ ও ক্রীড়া বিভাগের উদ্যোগ সাথে টুমোরোজ ফাউন্ডেশন নামক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার আয়োজনে সাঁইথিয়া ব্লক এর গড়গড়িয়া গ্রামে নানান অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এবং যথাযথ ভাবে সংস্কৃতি দিবস পালিত হয়। পশ্চিমবঙ্গের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে, জাতি ধর্ম ভাষা নির্বিশেষে রাজ্যের সমস্ত মানুষের মধ্যে সম্প্রীতির সম্পর্ককে আরো সুদৃঢ় করতে এবং পরস্পরকে প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ করতে সরকারি ভাবে ঘোষিত হয় সংস্কৃতি দিবস পালনের। সরকারি বেসরকারি সহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে দিনটি পালনের জন্য নানান কর্মসূচি নেওয়া হয়।অনুরূপ সংস্থার পক্ষ থেকে সাঁইথিয়া ব্লক স্তরে সরকারের সাথে যৌথভাবে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। উৎসবটিকে তৃনমুল স্তরে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে উক্ত অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্রের কচিকাঁচাদের নিয়ে নানান অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিনটি পালিত হয়। উল্লেখ্য সংস্থা পরিচালিত আরলি চাইল্ডহুড এডুকেশন( ই সি ই) নামক প্রকল্পের মাধ্যমে জেলার বেশ কিছু অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে সরকারের সাথে যৌথভাবে আনন্দ বিনোদনের মাধ্যমে পাঠদান দেওয়া হয়। সেই সমস্ত কচিকাঁচারা সহ তাদের অভিভাবক ও স্থানীয় মানুষজনদের নিয়েই মূলত আয়োজিত হয় এদিনের অনুষ্ঠান।এদিন বাচ্চাদের নাচ, গান, আবৃত্তি, ছবিআঁকা , যোগা, স্থানীয় শিল্পীদের দ্বারা বাউল ও আদিবাসী নৃত্য পরিবেশিত হয় বলে আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয় । অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীরভূম জেলা শাসক বিধান রায়। এছাড়াও ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকার যুব কল্যাণ ও ক্রীড়া দপ্তর এর সাব ডিভিশনাল ইয়ুথ অফিসার বিনয় বালা, দীপঙ্কর সাহা এবং সংস্থার পক্ষে ছিলেন প্রোজেক্ট ম্যানেজার দেবরাজ মুখার্জী, অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোজেক্ট ম্যানেজার মনোজ খান এবং সাঁইথিয়া ব্লক এলাকার সুপার ভাইজার শুভাশিস রক্ষিত সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। উল্লেখ্য সংস্থা পরিচালিত আনন্দপাঠ প্রজেক্টের মাধ্যমে অনুরূপ সাঁইথিয়া, ইলামবাজার, রামপুরহাট-১, সিউড়ি-১, খয়রাশোল, রাজনগর ও লাবপুর ব্লক এলাকার মোট ১৬৯ টি সেন্টারেও সংস্কৃতি দিবস পালনের খবর পাওয়া যায়।
লোকপুর থানার পুলিশের রাখীবন্ধন উৎসব
সমগ্র দেশজুড়ে সরকারি বেসরকারি ভাবে নানান কর্মসূচির মাধ্যমে রাখীবন্ধন দিনটি মহাসমারোহে পালিত হয়। অনুরূপ বীরভূম জেলা পুলিশের উদ্যোগে এবং লোকপুর থানা পুলিশের আয়োজনেও যথাযথ ভাবে রাখী বন্ধন উৎসব পালন করা হয় সোমবার।পুলিশ যে শুধু শাসন করে,জনগন তা দেখে বহুযোজন দূরে থাকে বর্তমানে আর এরূপ কিন্তু নয়। পুলিশ এখন জনগণের বন্ধু হয়ে ওঠেছেন।তাইতো আপদে বিপদে মানুষের পাশে পুলিশকে দেখা যায় বিভিন্ন পরিষেবা প্রদানে।সেরূপ রাখীবন্ধন উপলক্ষে পুলিশ জনগণের মধ্যে কাছাকাছি অবস্থানের চিত্র দেখা যায় সোমবার লোকপুর এলাকা জুড়ে। পুলিশের পক্ষ থেকে এদিন পথচলতি মানুষদের হাতে রাখী পরানোর সাথে সাথে মিষ্টিমুখ করানো হয়। ব্যানার, রাখী ও মিষ্টির ডালি সহযোগে পদযাত্রা তথা বাজার পরিক্রমায় উপস্থিত ছিলেন লোকপুর থানার ওসি পার্থ ঘোষ, এ এস আই নয়ন ঘোষ সহ অন্যান্য পুলিশ ও সিভিক ভালান্টিয়ারেরা। উল্লেখ্য মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মোতাবেক রাজ্যের সমস্ত স্তরে আয়োজিত রাখীবন্ধন উৎসব থেকে জাতি ধর্ম বর্ণ ভাষা নির্বিশেষে ভাতৃত্ব এবং সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রাখার আহ্বান থেকে এধরনের কর্মসূচি।
লাভপুরে রাখীবন্ধনে বৃক্ষ প্রীতির নজির গড়লো নাট্যম
“লাভপুর নাট্যম ড্যান্স গ্রুপ এন্ড এডুকেশন সোসাইটি” সফলতার সঙ্গে ২০০৪ সাল থেকে সগৌরবে সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও জনকল্যাণমূলক কাজ করে আসছে। বৃক্ষরোপণ, পরিবেশ দূষণ রোধ,প্লাস্টিক বর্জন প্রভৃতি সচেতনতামূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে তারা । জনমানসে অপ্রকাশিত গুণী শিল্পী যেমন: কামার, কুমোর,মুচি এদেরকে প্রতি বছরই আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মাননা জ্ঞাপনের মাধ্যমে জনসমক্ষে তুলে ধরে এই সংস্থা । ১৯ আগষ্ট সোমবার বিকেল সাড়ে চারটেয় নাট্যমের ক্ষুদে সদস্য / সদস্যারা রাধা / কৃষ্ণ সেজে এবং বড়োরা ক্ষুদেদের সাথে পা মিলিয়ে নাট্যমের লাভপুর বিরামমন্দির পল্লীর অফিস থেকে লাভপুর ব্লক অফিস পর্যন্ত পায়ে হেঁটে এসে ব্লক অফিসের পাশে একটা প্রাচীন বটবৃক্ষে রাখী বেঁধে প্রতি বছর বৃক্ষ প্রীতির নজির গড়ে চলেছে নাট্যম । এরপর নাট্যমের ক্ষুদে সদস্য / সদস্যরা অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের হাতে রাখী পড়িয়ে দেওয়ার পর পথ চলতি মানুষদের হাতে রাখী পড়িয়ে চকলেট বিতরণ করে । এদিন লাভপুর বিরামন্দির পল্লীতে নাট্যমের অফিসেও রাখীবন্ধন উৎসব উপলক্ষে নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল । নাট্যমের এদিনের অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাহিত্য কর্মী এবং পেশায় শিক্ষক অনন্য বন্দ্যোপাধ্যায়, শিক্ষক জওহরলাল দাস , শিক্ষক কৌশিক রায় , শিক্ষক বিবেকানন্দ ঘোষ প্রমুখ। নাট্যমের কর্ণধার সুদীপ্ত মণ্ডল ওরফে বুলেট জানান — “বর্তমান সময়ে যেভাবে গাছ কাটা বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে আগামীতে মানুষের জন্য খুবই খারাপ সময় আসতে চলেছে। অবিলম্বে যথেচ্ছ ভাবে গাছ কাটা বন্ধ করা উচিত। বৃক্ষকে রাখী পড়ানোর মধ্যে দিয়ে আমরা বৃক্ষকে আপন করে নিয়ে সমাজকে একটা বার্তা দিতে চেষ্টা করে চলেছি প্রতিবছর।”